মানসিক রোগ গোপন রাখা রোগীর জন্য ক্ষতিকর


প্রকাশিত: ০৯:৫৯ এএম, ২৭ এপ্রিল ২০১৬

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামাল এ ইউ চৌধুরী বলেছেন, আমাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যদি কেউ মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়, তাহলে আমাদের স্বাভাবিক প্রবণতা হল আমরা তার বিষয়টি গোপন রাখি। এতে সে আরো বেশি মানসিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। যা রোগীর জন্য খুব ক্ষতিকর বিষয়।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এ্যাড ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত ‘প্রোমোটিং কমিউনিটি বেইসড মেন্টাল হেল্থ সার্ভিসেস’ প্রোজেক্ট বিষয়ক সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।

আমরা যদি রোগীর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করি তাহলে তাকে সেবা দিয়ে সুস্থ্য করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে হলে আমাদেরকে মানসিকভাবেও উন্নত হতে হবে। কারণ গত বছর ১০ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করেছে। এছাড়া শিশু ও নারীদের প্রতি অনেক অত্যাচার করা হয়েছে যা আমাদের জন্য উন্নয়নে বাধা স্বরূপ।

মানসিক রোগের চিকিৎসা কোথায় গেলে পাওয়া যাবে তার একটা সিটিজেন চার্টার থাকা প্রয়োজন জানিয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. জিল্লুর রহমান খান বলেন, যদি নিজের পরিবারের কেউ মানসিক রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে তার জন্য জরুরি ভিত্তিতে কোথায় চিকিৎসা পাওয়া যাবে সেই স্থানগুলোর নাম টেলিভিশন-রেডিও ও পত্রিকার মাধ্যমে জনগণকে জানানো জরুরি।

২০০৫ সালে এক গবেষণার পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, আঠারো বছরের ঊর্ধ্বে ১৬.১ ভাগ মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত। ২০০৯ সালে আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগের ১৭টি জেলায় শিশু-কিশোরদের মধ্যে ১৮.৪ ভাগ শিশু-কিশোর মানসিক রোগী ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ৪.১।

তিনি বলেন, জাতীয় মানসিক হাসপাতালে ৬টি ইউনিটে আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। কেউ মানসিক রোগে আক্রান্ত হলে তাকে অবহেলা না করে ভাল ব্যবহারের মাধ্যমে চিকিৎসা করতে হবে। এর জন্য সমাজের সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে এ্যাড ইন্টারন্যাশনালের কাউন্ট্রি ডিরেক্টর শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ছয়টি জেলায় মানসিক রোগের চিকিৎসা দেয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। চারশ’ রোগীকে আমরা কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করছি।

এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের মানসিক সাস্থ্য সেবা দেয়ার জন্য যে টিম কাজ করছে তাদের সাথে যোগাযোগ করে এই সেবাটাকে স্থানীয় পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করছেন বলেও জানান তিনি।

আয়োজক সংগঠনের কান্ট্রি ডিরেক্টর শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, এ্যাড ইন্টারনাশনালের প্রোজেক্ট ম্যানেজার নাজমুন নাহার সহ সংগঠনের সদস্যরা।

এএস/এসএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।