‘সময়মতো ছানি অস্ত্রোপচারে দৃষ্টিশক্তি শতভাগ ফিরে পাওয়া সম্ভব’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৩০ এএম, ১২ জুন ২০২৪

সময়মতো অস্ত্রোপচার হলে শতভাগ দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন চক্ষু চিকিৎসার দিকপাল এশিয়া-প্যাসিফিক একাডেমি অব অপথালমোলজি প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. আভা হোসেন।

তিনি বলেন, একসময় ছানি না পেকে যাওয়া পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করা হতো না। সেখান থেকে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আধুনিক চিকিৎসার কারণে খুব সহজেই কম সময়ে করা যাচ্ছে। আমাদের কাছে যারা আসেন তারা চিকিৎসার আওতায় এলেও বহু রোগী ঘরে থাকছেন, চিকিৎসা করাচ্ছেন না।

ছানি সচেতনতা মাস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১১ জুন) রাজধানীর বাংলাদেশ আই হসপিটালে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি অব ক্যাটারেক্ট অ্যান্ড রিফ্রেক্টিভ সার্জন্স (বিএসসিআরএস)’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, আঘাতজনিত কারণে শিশুরা এবং বয়স বেড়ে গেলে বয়স্কদের ছানি পড়ে। এজন্য সচেতনতার সীমা-পরিসীমা নেই। বাচ্চারা আঘাত পেলে রেটিনা ঠিক আছে কিনা সেটি দেখতে হবে, না হলে দ্রুতই তার ছানি পড়বে। আমরা ছানি সম্পর্কে অবহেলা করি। এজন্য ছানি সমস্যা ও কীভাবে বেঁচে থাকা যায় সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করতে হবে। কমিউনিটি ক্লিনিকে এ ব্যাপারে কাজে লাগানো যেতে পারে। প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় উপজেলা পর্যায়ে ভিশন সেন্টার স্থাপন হচ্ছে। পাশাপাশি সোসাইটির পক্ষ থেকে গ্রামাঞ্চলে ক্যাম্প করা হয় বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, দেশে ৬ লাখের বেশি মানুষ চোখের ছানি রোগে ভুগছে। প্রতিবছর নতুন করে রোগী বাড়ছে দুই লাখের মতো। যার ৮০ শতাংশই গ্রামে। কমিউনিটি ক্লিনিক ও ভিশন সেন্টারসহ স্থানীয় পর্যায়ে চিকিৎসার পরিধি বাড়লেও অসচেতনতা ও অবহেলায় চিকিৎসার বাইরে বহু রোগী। শতভাগ নিরাময়যোগ্য এ রোগ প্রতিরোধে সময়মতো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া ও রোগীর পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞরা।

চিকিৎসকেরা বলেন, ছানি যে একটা নিবারণযোগ্য রোগ সে সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষের ধারণা নেই। অথচ সুস্থ হলে নিজের কাজ যাতে নিজেই করতে পারে, অন্যের ওপর নির্ভরশীল হতে হয় না। অধিকাংশ রোগী বয়স্ক হওয়ায় পরিবারের অন্য সদস্যরা অবহেলা করেন। ভুক্তভোগীরা চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হয়ে মানসিক সমস্যায় দিন পার করেন। এতে করে কর্ম দক্ষতা কমে যায়।

এ সময় বিএসসিআরএসের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডা. মাহবুব বলেন, গত কয়েক দশকে চোখের চিকিৎসা যতটা আধুনিক হয়েছে অন্য কোনো চিকিৎসায় হয়নি। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সার্জারি হয় ছানি। তারপরও আমাদের সচেতনতার ব্যাপক ঘাটতি থেকে গেছে। এজন্য শুধু সরকার নয় বেসরকারি হাসপাতাল ও বিভিন্ন সংস্থা এগিয়ে এলে ছানিজনিত রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।

সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. আশরাফ সাঈদ বলেন, আমাদের দেশে বাবা-মায়ের ছানি হলে সন্তানরা অপারেশন করতে চায় না, অবহেলা করেন। তাই, পরিবারের সদস্যদের সচেতনতা জরুরি। এটি হলে অনেক বয়স্ক মানুষ নিজের ওপর নির্ভরশীল হতে পারবে। অস্ত্রোপচার করলেই যে ছানি ভালো হয়ে যাবে গ্রামের অধিকাংশ মানুষের ধারণা নেই। বর্তমানে উপজেলা পর্যায়েও সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার সক্ষমতা রয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচার হচ্ছে। শিক্ষিতদের মধ্যেও অসচেতনতা রয়েছে। অস্ত্রোপচার না করলে মানসিক স্বাস্থ্যে অনেক বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এএএম/এমএএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।