অঙ্গদানের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে প্রয়োজন জনসচেতনতা: গওহর রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:২৫ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০২৪

অঙ্গদানের মতো মহৎ বিষয়টিকে আন্দোলনে পরিণত করতে বা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী।

তিনি বলেন, অঙ্গদান কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য ‘লিভিং উইল’ এর ধারণাটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। লিভিং উইলটা খুব প্রয়োজনীয় জিনিস।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিল্টন হলে সফল ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্টেশনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে সারাহ ইসলাম ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেল।

দিবসটি ‘ক্যাডাভেরিক ডোনেশনই বাঁচাতে পারে লাখো প্রাণ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-ব্লকের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।

গওহর রিজভী বলেন, এক সেকেন্ডের মধ্যেই আপনার সঙ্গে যেকোনো কিছু হয়ে যেতে পারে। আপনি হয়তো কথা বলতে পারবেন না, মুভ করতে পারবেন না, কিন্তু আপনার অর্গানগুলো কাজ করবে। তখন আত্মীয়রা চাইবে আমরা একে যতদিন বাঁচিয়ে রাখতে পারি। কিন্তু যদি অর্গান ও বডি তিনি যদি বলে যান, যদি লিভিং উইল আমরা দিয়ে যাই তাহলে তখন নিকটতমদের সিদ্ধান্ত নিতে এবং অনেক কাজই সহজ হয়ে যায়। কাজেই আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো- কার্ড করেন এবং যদি পারেন লিভিং উইল করে যান।

অঙ্গদানের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে প্রয়োজন জনসচেতনতা: গওহর রিজভী

মানবকল্যাণে অঙ্গদানের আহ্বান জানিয়ে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সড়ক বা যেকোনো দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন কারণেই অনেক রোগীকে দীর্ঘদিন আইসিইউতে থাকতে হয়। এ সময় অনেকেই ব্রেন ডেথ হয়ে যায়। অর্থাৎ তাদের কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ করে কিন্তু তাদের মস্তিষ্ক মারা যায়। এমন মস্তিষ্ক মৃত (ব্রেইন ডেথ) ব্যক্তির দেহ থেকে কিডনি, কর্নিয়া ও লিভারসহ অন্যান্য আট ধরনের পৃথক অঙ্গ সংগ্রহ করে আটজন মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন সম্ভব।

তিনি বলেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতেও এখন ক্যাডাভেরিক অঙ্গ প্রতিস্থাপন বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে। শীর্ষ দেশগুলোও আমাদের মুসলিম অংশীদারদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা স্বাস্থ্যসেবা নীতিমালাগুলো পরিমার্জন করতে পারি। অঙ্গ সংগ্রহ এবং এর প্রক্রিয়াগুলোকে সহজতর করতে পারি এবং অঙ্গদানের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে জনসচেতনতা বাড়াতে পারি। কেননা এ প্রতিস্থাপন ব্যবস্থার মাধ্যমে মৃত্যু পথযাত্রী অন্য মানুষদের সম্পূর্ণ সুস্থ ও কর্মক্ষম করে তোলা সম্ভব। আর ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে যদি দেখা হয়, তবে পবিত্র কোরআনেও বলা হয়েছে, ‘যে মানুষের প্রাণ বাঁচালো, সে যেন তামাম মানুষকে বাঁচালো। ’

ক্যাডাভেরিক কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে দৃষ্টি ফিরে পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সুজন। তিনি বলেন, আমি আগে অন্ধ ছিলাম, কিছুই দেখতে পেতাম না। এখন আমি পৃথিবীর আলো দেখতে পাচ্ছি।

আলোচনায় ব্রেন ডেথ রোগীর অঙ্গ বা ক্যাডাভেরিক ডোনেশনে কার্ড ও লিভিং উইলের আহ্বান জানান বক্তারা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেনাল ট্রান্সপ্লান্ট প্রধান ও প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল। অনুষ্ঠানে আইসিইউ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ আশরাফুজ্জামান সজীব একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।

এএএম/এমএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।