দেশে নিউমোনিয়ায় প্রতি বছর প্রায় ২৪ হাজার শিশুর মারা যায়
দেশে নিউমোনিয়ায় প্রতি বছর পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ২৪ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়। যাদের অর্ধেকের বেশি চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত হচ্ছে। নিউমোনিয়ায় শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে অভিভাবকদের সচেতনতায় আরও জোর দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর মিরপুরের ডা. এম আর খান শিশু হাসপাতাল মিলনায়তনে বিশ্ব নিউমোনিয়া এবং বিশ্ব প্রিম্যাচিউর শিশু দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সেমিনারে এসব কথা বলেন তারা।
এ সময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির পেডিয়াট্রিক পালমোনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সাকিবুর রহমান ও নিওনাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শারমিন আফরোজ।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নবজাতক স্বাস্থ্য বিষয়ক জাতীয় কারিগরি ওয়ার্কিং কমিটির চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, ‘নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলেও অনেক অভিভাবক হাসপাতালে আনতে চান না। গুরুতর হলেই কেবল আনা হয়। এতে মৃত্যুঝুঁকি বাড়ে। এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে সরকারকেই মূখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে।’
এসময় এম আর খান শিশু হাসপাতালের (একাডেমিক) পরিচালক অধ্যাপক ড. নবো কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘পরিবেশ, বুকের দুধ না খাওয়া, প্যাসিভ স্মোকিংয়ের কারণে নিউমোনিয়া বেশি হয়। এ রোগ থেকে সুরক্ষা পেতে আরও সচেতন হওয়া জরুরি। পাশাপাশি সফল ভ্যাকসিনেশনেও নিউমোনিয়া কমানো সম্ভব। বর্তমানে হাসপাতালে যেসব রোগী আসছে তার মাত্র ৪২ শতাংশকে আমরা ভর্তি করতে পারছি। বাকি ৫৮ শতাংশ রোগী চিকিৎসার বাইরে থাকছে। এর মধ্যে অনেকে চিকিৎসার অভাবে মারা যায়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে অধিকাংশ নবজাতক শিশুর মৃত্যুর হার প্রিম্যাচিউর ও কম ওজনের কারণে। ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিউয়োমনিয়ায় মৃত্যুর হার বেশি। নিউয়োমনিয়ায় প্রতি বছর ২৪ হাজার শিশু মারা যায়।’
এসময় সরকারের জাতীয় নবজাতক স্বাস্থ্য কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘নিউমোনিয়া ওষুধের চেয়ে প্রতিরোধই সবচেয়ে উত্তম পন্থা। ভ্যাকসিন, হাত ধোয়া এবং ব্রেস্ট ফিডিং বাড়ানোর মাধ্যমে আমরা এটি প্রতিরোধ করতে পারি। তবে সংকটাপন্নদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য ফ্যামিলি সেন্টার খুব জরুরি। যেখানে প্রতিরোধের পাশাপাশি চিকিৎসার পরবর্তীতে কী ধরনের ব্যবস্থা অভিভাবকদেরদের নিতে হবে সেই পথ দেখিয়ে দিতে হবে। এতে করে সরকারের খরচ কমার পাশাপাশি আক্রান্ত ও মৃত্যু কমে আসবে।’
শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘নিউমোনিয়া সম্পূর্ণ প্রতিরোধযোগ্য হলেও এখনো আমরা সেটি পুরোপুরি পারিনি। ঢাকার রাস্তায় ধুলোর মাত্রা অনেক বেশি। যা থেকে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ অনেক বেশি। ফলে পরিবেশের কারণে আক্রান্ত থামছে না।’
এএএম/এমআইএইচএস/জিকেএস