জরায়ুমুখ ক্যানসার রোধে টিকাদান

১০-১৪ বছর বয়সী ৯৫ শতাংশ কিশোরী পাবে এইচপিভি ভ্যাকসিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:১৭ পিএম, ০২ অক্টোবর ২০২৩

এক ডোজ এইচপিভি টিকা নিন, জরায়ু ক্যানসার রুখে দিন, প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশে শুরু হলো এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি-২০২৩। ১১ শিশুকে পরীক্ষামূলকভাবে টিকাদানের মাধ্যমে দেশে সরকারিভাবে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের অর্থাৎ পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের টিকাদানের মধ্য দিয়ে শুরু হলো এই কার্যক্রম।

সোমবার (২ অক্টোবর) জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে (নিপসম) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় (ইপিআই) এই টিকাদান শুরু হয়। 

আজ টিকা নেওয়া ১১ শিক্ষার্থীর মধ্যে রাজধানীর আজিমপুর গার্লস স্কুলের সাতজন, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন, ডিপিএস স্কুলের ২ জন এবং নারায়ণগঞ্জ সরকারি স্কুলের একজন।

jagonews24

ইপিআইয়ের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক এস এম আবদুল্লাহ আল মুরাদ বলেন, জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধী একটি নীতিমালা করা হয়ে হয়েছে। মোট টিকা পাওয়ার যোগ্য ৯৫ ভাগকে দেওয়া টার্গেট রয়েছে। তিন ধাপে এই টিকা দেওয়া হবে। প্রথম ধাপে ঢাকা বিভাগের সব স্কুলে দেওয়া হবে এই টিকা। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম ও বরিশালে চলবে এই টিকাদান এবং এর পরের ধাপে সারাদেশে দেওয়া হবে। এখনই মূল টিকাদান কর্মসূচি শুরু না হলেও অক্টোবর মাসের ১৫ তারিখে শুরু হবে মূল কার্যক্রম।

অনুষ্ঠানে ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের মাধ্যমে যেভাবে টিকা নেওয়া যাবে তা প্রদর্শন করা হয়। ওয়েব সাইটটি হলো www.Vaxepi.gov.bd। এই সাইটটিতে শুধু এইচপিভি ভ্যাকসিন ছাড়াও নিবন্ধনকৃতদের জন্য প্রযোজ্য ইপিআই এর যেসব টিকা গ্রহণ করতে পারবে তাও জানানো হবে। চাইলে সেসব ভ্যাকসিন নিতেও আবেদন করতে পারবে।

আরও পড়ুন>প্রয়োজন নিয়মিত স্ক্রিনিং/ মধ্যবয়সী নারীরা জরায়ুমুখ ক্যানসারে বেশি আক্রান্ত, মূলে বাল্যবিয়ে 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম বলেন, বাংলাদেশ ভ্যাকসিন ফ্রেন্ডলি দেশ। করোনা টিকাদানেও আমরা সফলতা অর্জন করেছি। এবারও তা সম্ভব হবে। আমরা এক ডোজের এই টিকার বিষয়ে মানুষকে জানানোর ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা সব প্রতিষ্ঠানেই লিফলেট বিতরণ করবো। রুটিন ভ্যাকসিনের জন্য আমরা এই ভ্যাকসিন অন্তর্ভুক্ত করবো। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে কাজ করবো।

jagonews24

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ইপিআইয়ের মাধ্যমিক ১৩টি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। আর এই কার্যক্রমের মাধ্যমেই প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিন হিরো হয়েছেন। জরায়ুমুখের ক্যানসারের এই টিকাদানের মাধ্যমে আমরা দেশে আরো একটি মাইলফলক অর্জন করছি। এই জরায়ুমুখ ক্যানসার নীরব ঘাতক। প্রতিবছর দেশে ৫ হাজার নারীর মৃত্যু হয়। সারাবিশ্বের ৩ লাখের মতো নারী এই রোগের কারণে মারা যায়। যেহেতু একটি ভাইরাস দ্বারাই এই ক্যানসার হয়ে থাকে, তাই এই ভ্যাকসিন নারীদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করবে।

তিনি আরও বলেন আমরা দেখেছি এই ভ্যাকসিন নিরাপদ। সাইড ইফেক্ট নেই। এই ভ্যাকসিন নিয়ে সারাজীবনের জন্য ক্যানসার থেকে মুক্তি লাভ করতে পারে। তবে তার মানে এই না যে স্ক্রিনিং করা লাগবে না। নারীদের নিয়মিত স্ক্রিনিং করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আজ থেকে সীমিত আকারে শুরু হচ্ছে এই কার্যক্রম। ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী ১ কোটি শিশুকে এই টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি। আমরা আশা করি তারা জরায়ুমুখ ক্যানসার মুক্ত থাকবে।

এএএম/এসএনআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।