ডেঙ্গু আক্রান্ত সন্তানের সুস্থতায় লড়ে যাচ্ছেন মায়েরা
মহাখালীর ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আল হাদী। তার সঙ্গে হাসপাতালে থাকছেন মা ঝুমুর আক্তার। সঙ্গে চার বছরের মেয়ে ঝর্ণা। তিনদিন ধরে তাদের অবস্থান হাসপাতালেই। আর পুরোটা সময় ছেলেকে সেবা দিতে দিনরাত পরিশ্রম করছেন ঝুমুর। খাওয়ানো থেকে শুরু করে, ওয়াশরুমে নিয়ে যাওয়া, ওষুধ আনা, টেস্ট করানো- সব কিছুই করছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ঝুমুরের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, গেন্ডারিয়া থেকে এসেছি আমরা। অনেক বড় হাসপাতাল। ওয়ার্ড থেকে প্যাথলজিতে যাওয়া কষ্টকর। ছেলের টেস্ট রিপোর্ট আনা থেকে শুরু করে সব কাজ আমিই করি। এখানে সেবা ভালো। কিন্ত একা একা সব কাজ করতে কষ্ট হয়।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু আক্রান্ত স্বামী-স্ত্রী হাসপাতালে, সন্তানরা বাড়িওয়ালার কাছে
শুধু ঝুমুর নন, এ হাসপাতালে তার মতো অনেকেই ডেঙ্গু আক্রান্ত স্বজনদের সেবা করে যাচ্ছেন। রোগীদের মধ্যে কারও বাবা-মা, কারও সন্তান, আবার কারও স্বামী বা স্ত্রী রয়েছেন।
এমনই একজন মালিবাগের বাসিন্দা আল-আমিন। পেশায় ছোটখাটো অনলাইন ব্যবসায়ী। তিনি ডেঙ্গু আক্রান্ত। মাকে সঙ্গে নিয়ে ছয়দিন ধরে হাসপাতালে। মা হাসি বেগম ছেলে আল-আমিনের জন্য একাই দৌড়াদৌড়ি করছেন।
হাসি বেগম বলেন, গত আটদিন আগে ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। কোনো উপায় না পেয়ে এখানে ফ্রি চিকিৎসা তাই আসি। বাসায় আমার ছোট ছেলে একা। আমি ছাড়া সেবা করার কেউ নেই।
আরও পড়ুন: ‘সুদে টাকা নিয়ে ভাইয়ের চিকিৎসা চালাচ্ছি’
পাশের ওয়ার্ডেই আরেক ডেঙ্গু আক্রান্ত ছেলেকে খাওয়াচ্ছিলেন মা নুরাইন। তার ছেলে আকাশ ট্রাকচালক। ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ নুরাইন একাই করছেন।
আকাশ বলেন, মা সহজ-সরল মানুষ। কোনো সমস্যা হলে নার্স ডেকে আনা, টেস্টের রিপোর্ট নিয়ে আসা, বাইরে থেকে খাবার আনা- একাই করছেন মা। এখানে চিকিৎসা খরচ সামান্য, কিন্ত কেউ না থাকায় মা কাহিল হয়ে যাচ্ছেন।
রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওয়ার্ড ও ওষুধ ফ্রি হওয়ায় হাসপাতালের সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট তারা। তবে অধিকাংশ রোগী ঢাকার বাইরের।
ডিএনসিসি হাসপাতালের স্টাফ নার্স সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে সেখানে প্রায় ৫০০ ডেঙ্গুরোগী ভর্তি। আইসিইউতে আছেন ৫০ জন। গত এক সপ্তাহে মারা গেছেন দুজন।
আরএ/জেডএইচ/জেআইএম