অ্যাম্বুলেন্সে আয়কর না নেওয়ার দাবি
সেবাখাতে প্রাইভেটকারে বিআরটিএ কর্তৃক প্রণীত আয়কর (এটিআই) অ্যাম্বুলেন্সে না নেওয়াসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছে অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতি।
সোমবার (১০ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের সংগঠনটি এ দাবি জানায়।
তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- অনতিবিলম্বে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন; অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীঘোষিত অ্যাম্বুলেন্সের টোল ফ্রি বাস্তবায়ন; দেশের প্রত্যেকটি হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের পার্কিং সুবিধা দেওয়া; রোগী থাকা অবস্থায় প্রতিটি পাম্পে সিরিয়াল ছাড়া তেল এবং গ্যাস নিতে দেওয়া; সড়কে হয়রানিমুক্ত অ্যাম্বুলেন্স চলাচল।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. বাদল মাতব্বর বলেন, নানা দুর্যোগে-দুঃসময়ে আমরা মানুষের পাশে থাকলেও বিভিন্ন সময় নানা সমস্যা মুখ বুঝে সহ্য করে আসছি। করোনা মহামারির সময় দেশের মানুষ যখন জীবন বাঁচাতে ঘরে নিরাপদে অবস্থান করেছে, তখন মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের সহকর্মীরা নিরবচ্ছিন্ন অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়ে গেছে। করোনা সংক্রমণের ভয়ে পরিবার, প্রিয়জনকে ঘরে রেখে আমাদের সহকর্মীদের থাকতে হয়েছে হোটেল কিংবা গাছতলায়।
তিনি বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনা কিংবা চুড়িহাট্টা, সোহরাওয়ার্দী হাসাপাতালে আগুন, চট্টগামের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা থেকে শুরু করে দেশের যে কোনো দুর্যোগ-দুঃসময়ে অ্যাম্বুলেন্সের কর্মীরা অতন্ত্র প্রহরীর মতো সেবা দিয়ে যেতে কোনো দিন কার্পণ্য করেননি। কিন্তু এর বিনিময়ে কোনো দিন প্রতিদান চাইনি আমরা।
আরও পড়ুন>> সজাগ না হলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বাদল মাতব্বর বলেন, জাপান থেকে আমরা অ্যাম্বুলেন্স আমদানি করি অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে। বিআরটিএ রেজিস্ট্রেশন করি অ্যাম্বুলেন্স হিসেবেই, অথচ আয়কর দেওয়ার সময় দিতে হয় প্রাইভেট গাড়ি হিসেবে। হাসপাতাল এবং ট্রাস্টি বোর্ডের অ্যাম্বুলেন্সের ক্ষেত্রে আয়কর নেওয়া হয় মাত্র ৫২ টাকা, অথচ বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে অতীতে নেওয়া হতো ৩০ হাজার টাকা। এবছর থেকে ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হবে বলে জানতে পেরেছি। সেবাখাতে একই দেশে দুই ধরনের আইন কী করে হয় সেটা আমাদের বোধগাম্য নয়। সেবার ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাই।
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর সেবায় আমাদের অ্যাম্বুলেন্স অর্ন্তভুক্ত হয়ে সেবা দিয়ে আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছিলেন, অ্যাম্বুলেন্স টোল ফ্রি থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার প্রায় দুই বছর পার হয়ে গেলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি অদৃশ্য কারণে। আমাদের টোল ট্যাক্স অ্যাম্বুলেন্সের নেওয়া হলেও মানি রিসিট দেওয়া হয় মাইক্রোবাসের।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে ঘুরেও আমরা এর কোনো প্রতিকার পাইনি। জাতীয় নীতিমালার দাবিতে ৬৪ জেলায় মানবন্ধন করা হলেও সুরাহা হয়নি। উচ্চ আদালতে একটি রিট করা হলেও সমাধান হয়নি। তাই আমরা অ্যাম্বুলেন্সের জন্য জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ণসহ ৬ দফা দাবি জানাচ্ছি।
অনতিবিলম্বে দাবি আদায় না হলে ভবিষ্যতে ধর্মঘটসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন সমিতির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. গোলাম মোস্তফা, সহ-সভাপতি মো. দবির হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. উজ্জল হোসেন চৌধুরী, উপদেষ্টা চাঁন মিয়া, সমিতির ঢাকা জেলার সভাপতি আবু সালেহ খান রিপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এএএম/ইএ/জিকেএস