দাবি আদায়ে সিএইচসিপির প্রকল্প অফিস ঘেরাও কর্মসূচি আজ


প্রকাশিত: ১০:০৫ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

চাকরি জাতীয়করণ ও ট্রাস্ট আইন বাতিল করে রাজস্ব খাতে নেয়ার দাবিতে প্রকল্প অফিস ঘেরাও ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পে কর্মরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) সদস্যরা।

আজ (মঙ্গলবার) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মহাখালীস্থ প্রকল্প অফিস ঘেরাও ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সারাদেশ থেকে ১৩ হাজার সিএইচসিপি কর্মচারী এই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সিএইচসিপি কর্মচারীরা জানান, চাকরি জাতীয়করণ, ট্রাস্ট আইন বাতিল, সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ ও বৈষম্যের অবসানের দাবিতে মূলত এই কর্মসূচি। এর আগে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দাবি জানানোর পরও কোনো সাড়া না পাওয়ায় এই কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান তারা।

একই দাবিতে গত সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন করে কর্মবিরতি কর্মসূচিও পালন করেছেন কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা। জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এই হেলথ কেয়ারগুলোকে রাজস্ব খাত থেকে একটি ট্রাস্ট আইনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

সিএইচসিপির সদস্যরা জানান, জাতীয় বেতন কাঠামোয় সবার বেতন বাড়লেও তাদের বেতন বৃদ্ধি না করে ১৪ নম্বর গ্রেডেই রাখাতে তাদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এ ছাড়া তারা সময়মতো বেতন-ভাতা পান না বলেও অভিযোগ রয়েছে।


বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের গাইবান্ধা জেলার সভাপতি মো. আতাউর রহমান আতা ও সদস্য ফরিদুল সাদেক জাগো নিউজকে বলেন, কয়েক মাস পরপর তাদের বেতন দেয়া হয়। তাছাড়া গত চার বছরের ইনক্রিমেন্ট-এর টাকাও পাইনি। এতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। অফিস কর্তৃক নানা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।

সিএইচসিপির সদস্যরা জানান, ২০১৩ সালে তাদের চাকরি জাতীয়করণের আশ্বাসে এসিআর লেখা ও সার্ভিস বুক খোলার নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অথচ এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। দেশের ১৩ হাজার ৬৮১টি কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচসিপি কর্মচারীরা এতে সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছেন।

১৯৯৬ সালে সরকার দেশে মোট ১৩ হাজার ৬৮১টি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করে। সরকার পরিবর্তনের পর ২০০১ সালে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। ২০০৮ সালে কমিউিনিটি ক্লিনিকগুলো ফের চালু হলে আশার আলো দেখেন তারা। সে সময় কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডারদের নিয়োগ দেয়া হয়।

তখন থেকে তারা সীমিত সুযোগ-সুবিধার পরও স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে দেশে মা ও শিশু মৃত্যুর হার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে চেষ্টা চলছে। বর্তমানে প্রতিটি ক্লিনিকে একজন স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার পরিকল্পনা সহকারীসহ মোট তিনজন স্টাফ কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডাররা সপ্তাহের ছয়দিনই দায়িত্ব পালন করে থাকেন বলে জানান সিএইচসিপির সদস্যরা।


বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম জানান, ২০১৩ সালে চাকরি জাতীয়করণের আশ্বাস দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এজন্য বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন (এসিআর) লেখা ও সার্ভিস বুক খোলার নির্দেশ থাকা স্বত্ত্বেও তিন বছর ধরে দাবি আদায়ের বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

এর আগে দু’বার প্রেসক্লাব ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দাবি আদায়ে কর্মসূচি দেয়া হয়েছিল। সেময় মন্ত্রণালয় দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে আমাদের চাকরিতে যোগদানের অনুরোধ জানানোতে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কিন্তু এরপর আজও দাবি পূরণ হয়নি। আমরা আর মিথ্যে আশ্বাসে বিশ্বাসী নই। আমরা এর বাস্তবায়ন চাই।

একারণেই মূলত এই প্রকল্প অফিস ঘেরাও ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এবার কোনো সিএইচসিপি কর্মচারী কর্মস্থলে ফিরবে না।

জেইউ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।