দেশে করোনার চেয়ে তিনগুণ বেশি ক্যানসারে মৃত্যু: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশে এখনো ক্যানসারের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বুধবার (২ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। অনুষ্ঠানে জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং কর্মসূচি সংক্রান্ত তথ্য ও ফলাফল প্রকাশ হয়।
সরকার আট বিভাগে ক্যানসার সেন্টার করার উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার শনাক্ত করতে পারলে, এই রোগ থেকে শতভাগ সুস্থ হয়ে ওঠার চিকিৎসা রয়েছে। আটটি বিভাগীয় ক্যানসার সেন্টারে আমরা সেই চিকিৎসা ব্যবস্থা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রতিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পর্যায়ক্রমে প্রতি জেলায় মেমোগ্রাফি মেশিন প্রদান করবো।
গত এক বছরে করোনার চেয়ে তিনগুণ বেশি মানুষ ক্যানসারে মারা গেছেন জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, প্রায় ১৩ হাজার নারী প্রতিবছর স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এরমধ্যে মৃত্যুবরণ করেন প্রায় সাত হাজার মানুষ। জরায়ু মুখ ক্যানসারে আট হাজার নারী আক্রান্ত হন, এর মধ্যে মারা যান পাঁচ হাজার।
বছরে বাংলাদেশে ক্যানসারে এক লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর দেড় লাখ লোক নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। ১৫-১৮ লাখ ক্যানসারের রোগী বাংলাদেশে রয়েছে। তিন বছরে করোনায় যে পরিমাণ মৃত্যু হয়েছে, গত এক বছরে ক্যানসারে তার চেয়ে তিনগুণ বেশি রোগী মারা গেছেন।
তিনি বলেন, ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ের জন্য ৫৭০টি সেন্টার করা হয়েছে। যার মাধ্যমে প্রাথমিক স্ক্রিনিং করা হয়। এছাড়া ক্যানসার পজিটিভ রোগীর জন্য ৪৩টি কলোসকপি সেন্টার করা হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা এবং নির্দেশনা রয়েছে ৫০০টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ডাটা ট্রাকিং সেন্টার করার।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যানসার নির্ণয় এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. আশরাফুন্নেসা বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব রাশেদা আকতার, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ প্রমুখ।
এএএম/জেডএইচ/জিকেএস