মৃত্যুপথযাত্রী ছেলেটির পাশে নেই কোনো আপনজন


প্রকাশিত: ০৩:০১ পিএম, ২৩ জানুয়ারি ২০১৬
ছবি-সংগৃহীত

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউ’র দুই নম্বর বেডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে এক কিশোর। বয়স কতইবা হবে। খুব জোর এগারো কি বার বছর। সড়ক দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত এই ছেলেটি ১০দিন যাবত সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে আছে।

আইসিইউ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ভাষায় ছেলেটি মস্তিষ্কে ডিফিউজ এক্সোনাল ইনজুরিতে আক্রান্ত। দেখলে মনে হবে সে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। কিন্তু দুর্ঘটনায় তার মস্তিষ্ক এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে চিকিৎসকরা কোনো ধরনের অস্ত্রোপচারের সাহস পাচ্ছেন না। ভাগ্যবিধাতার ওপর ছেলেটিকে ছেড়ে দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

মৃত্যুশয্যায় থাকলেও হতভাগা ওই কিশোরের পাশে আপনজন কেউ নেই! আইসিইউ’র অন্যান্য রোগীকে তাদের স্বজনরা দেখতে আসলেও ওই কিশোরকে কেউ দেখতে আসেন না। আর আসবেনই বা কি করে। কারণ তারা কেউ হয়তো জানেনই না, কোন হতভাগী মায়ের বুকের ধন এই শিশুটি।

ঢামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ১১ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিরপুর ১০ নম্বর সার্কেল চত্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয় অজ্ঞাতনামা ওই কিশোর। মাথায় তীব্র আঘাতের ফলে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় তার।

দুর্ঘটনার পর অনেক ক্ষণ রাস্তায় পড়ে থাকলে স্থানীয় লোকজন তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাফিজুর রহমান চৌধুরী রাজিব নামে এক যুবক পুলিশের সহায়তায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করেন।

ঢামেক এনেসথেসিয়া বিভাগের বিভাগীয় ও আইসিইউ প্রধান অধ্যাপক ডা. আবদুর রহমান শনিবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে জানান, ছেলেটির মস্তিষ্কে বড় ধরনের আঘাত লেগেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এ ধরনের আঘাতকে ডিফিউজ এক্সোনাল ইনজুরি বলা হয়।

তিনি বলেন, সাধারণত সড়ক দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কের দুই একটি জায়গায় আঘাত লাগলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ইনজুরি সারিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু অজ্ঞাত এই ছেলেটি মস্তিষ্কজুড়ে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় তারা অস্ত্রোপচারের সাহস পাচ্ছেন না।

ছেলেটির আপনজন কেউ না থাকলেও সরকারিভাবে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতার মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

এমইউ/একে/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।