দেশে টিকাগ্রহীতার সংখ্যা ২১ কোটি ছাড়ালো

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১২:২৭ পিএম, ০১ মার্চ ২০২২
ফাইল ছবি

মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ও মৃত্যুরোধে ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করার পর থেকে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে টিকাগ্রহীতার সংখ্যা ২১ কোটি ছাড়িয়েছে।

সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত টিকা নেওয়া মানুষের সংখ্যা ২১ কোটি ২৩ লাখ ৮৮ হাজার ৫৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথম ডোজ টিকাগ্রহীতার সংখ্যা ১২ কোটি ৪২ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭৫ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ টিকাগ্রহীতার সংখ্যা ৮ কোটি ৪৩লাখ ২৬হাজার ২৩৪ জন এবং বুস্টার ডোজ গ্রহীতার সংখ্যা ৩৮ লাখ ৩ হাজার ১৪৭ জন।

২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাদানের মাধ্যমে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। প্রথমদিকে শুধু এ টিকা দেওয়া হলেও পরে চীনের সিনোফার্ম, ফাইজারের বায়োএনটেক, যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার ও জনসন অ্যান্ড জনসন টিকা যুক্ত হয়।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারিভাবে বিনামূল্যে প্রতিষেধক টিকাদান কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। নিয়মিত টিকাদানের পাশাপাশি বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক বিভিন্ন বয়সী নারী, পুরুষ ও ১২ বছরের বেশি বয়সী শিশু-কিশোরদের টিকাদান কার্যক্রম সফলতার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, এরই মধ্যে দেশের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠিীকে (টিকাদানের জন্য উপযুক্ত বয়সী) টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে একদিনে ১ কোটি ২০ লাখ (প্রথম, দ্বিতীয় ও বোষ্টার) ডোজেরও বেশি টিকা দেওয়া হয়। একদিনে বিপুল সংখ্যক টিকা দেওয়া বিশ্বে রেকর্ড বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

স্বাস্ত্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করার সুফল হিসেবে সারাদেশে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু ক্রমশ কমছে। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকে চতুর্থ সপ্তাহে করোনার ওমিক্রন ভাইরাসের সংক্রমণে নতুন রোগী শনাক্তের হার ৩২ শতাংশের বেশি থাকলেও সর্বশেষ ২৮ ফেব্রুয়ারি শনাক্তের হার ৪ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। সংক্রমণের পাশাপাশি মৃতের হারও কমে আসছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএস ও লাইন ডিরেক্টর এইচআইএস অ্যান্ড ই-হেলথ) অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে সর্বশেষ এক সপ্তাহে ৬৮ জন মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি করোনার টিকা নেননি। যারা টিকা নিয়ে মারা গেছেন এরকম মানুষের সংখ্যা খুবই কম।

অন্যদিকে, দেশে করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক টিকাদান কার্য়ক্রমের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তিনদিনের বিশেষ ক্যাম্পেইনের শেষ দিনে রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীসহ সারাদেশে সাড়ে ২৪ লাখ ৫০ হাজার ৪৫১ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ১৫ লাখ ৬৯ হাজার ৪৪ জনকে, দ্বিতীয় ডোজ ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৮৪৫ জনকে এবং বুস্টার ডোজ ৮৪ হাজার ৫৬২ জনকে দেওয়া হয়। এর আগে ২৬ ফেব্রুয়ারি বিশেষ টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনে ১ কোটি ২০ লাখ ও দ্বিতীয় দিন (২৭ ফেব্রুয়ারি) ২৭ লাখ ৯৩ হাজার ১১৭ ডোজেরও বেশি টিকা দেওয়া হয়। গণটিকার প্রথম দুইদিনের তুলনায় ২৮ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রগুলোতে অপেক্ষাকৃত ভিড় কম ছিল।

এমইউ/এমএএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।