ক্ষুদেবার্তা বাড়াবে শিশুদের টিকাদানের হার
মোবাইল ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে শিশুদের টিকা দেয়ার সঠিক দিনক্ষণ মায়েদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে গ্রামীণ প্রত্যন্ত অঞ্চল ও শহরের ভাসমান বসবাসকারী শিশুদের টিকাদানের হার বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সম্ভব। সম্প্রতি আইসিডিডিআরবি পরিচালিত এক জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
টিকাদানের ক্ষেত্রে ব্যাপক সফলতা সত্ত্বেও এখনও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল ও শহরের ভাসমান মা ও শিশুদের খুঁজে পেতে সমস্যা হওয়ায় ২০১৪ সাল পর্যন্ত টিকাদানের হার শতকরা ৮২ ভাগ রয়ে গেছে। এ দুটি ক্ষেত্রে টিকাদানের হার উন্নতির লক্ষ্যে আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানীরা মায়েদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাদের কাছে বছরব্যাপি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্ষুদেবার্তা পৌঁছানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে।
২৯৮ দিন বয়সী শিশুদের টিকাদানের ওপর পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে গ্রামীণ এলাকায় সম্পূর্ণ টিকাদানের হার শতকরা ৫৮ দশমিক ৯ ভাগ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৭৬ দশমিক ৮ ভাগ ও শহর এলাকায় শতকরা ৪০ দশমিক ৭ ভাগ থেকে ৫৭ দশমিক ১ ভাগে উন্নীত হয়।
আইসিডিডিআরবির সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি ও প্রধান গবেষক ড. মো. জসিমউদ্দিন বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি সহায়ক মোবাইল ক্ষুদেবার্তা টিকাদানের হার বৃদ্ধিতে সহায়ক। ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে সকলের টিকাদান নিশ্চিত করা সম্ভব। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে তথ্যপ্রযুক্তি সহায়ক মোবাইল ক্ষুদে বার্তার সুবিধা চালু করা যেতে পারে।
যেভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, এম পাওয়ার সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ ও ইউএস বেইজড জন হপকিনস ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথ এর বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় ‘এম টিকা’নামে অ্যানড্রোয়েড অ্যাপলিকেশন চালু করে।
স্বাস্থ্যকর্মীরা গ্রামীণ প্রত্যন্ত অঞ্চল ও শহরের ভাসমান গর্ভবতী মায়েদের নাম রেজিস্ট্রেশন করে। মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্যকর্মীরা গর্ভবতী মায়ের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ডাটাবেইজে শিশুটি কবে কখন জন্মগ্রহণ করবে তা পাঠিয়ে দেন।
পরবর্তীতে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে স্বাস্থ্যকর্মী ও রেজিস্টার্ড গর্ভবতী মায়ের কাছে টিকাদানের সময় ও নিয়মকানুন জানিয়ে দেয়া হয়। গবেষণায় দেখা গেছে এ পদ্ধতিতে টিকাদানের হার বৃদ্ধি পেয়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, শহরের ভাসমান ও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে টিকাদানের সাফল্যের জন্য সঠিকভাবে শিশু খুঁজে বের করা কাজ সহজ নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, গবেষণায় শহরের ফুটপাতে রেজিস্টার্ড মোট গর্ভবতী মায়ের অর্ধেক সংখ্যক মা তাদের সন্তান জন্মদানের তথ্যটি পর্যন্ত জানাননি। তবে গ্রামীণ প্রত্যঞ্চলে তথ্য জানানোর সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ।
এমইউ/এসএইচএস/এমএস