যেখানেই ভেজাল ওষুধ সেখানেই অভিযান


প্রকাশিত: ১১:৪৫ এএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৬
ফাইল ছবি

বিদেশের বাজারে প্রশংসিত হলেও দেশের বাজারে ওষুধের গুণগত মান সন্তোষজনক নয়। এক শ্রেণির অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী রাজধানীসহ সারাদেশে সুকৌশলে নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ছোট-বড় শহর কিংবা গ্রাম, ওষুধের কারখানা, ফার্মেসি, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার যেখানেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান সেখানেই নকল, ভেজাল ও নিম্নমান ও অননুমোদিত ওষুধ আটকসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত তিন বছরে (২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে) রাজধানীসহ সারাদেশে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের উপস্থিতিতে ভ্রাম্যামাণ আদালতে দুই হাজার ৭শ’ ২৭টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৩সালে ৬শ’ ৪৬, ২০১৪ সালে ৮৯২ ও ২০১৫ সালে এক হাজার ১শ’ ৮৯টি মামলা হয়।

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের দায়িত্বশীল তথ্য কর্মকর্তা ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক ছাবরিনা ইয়াসমিন জাগো নিউজকে জানান, গত দুই বছর ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাড়াশি অভিযানে নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রিসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সিলগালা, ওষুধ জব্দ, আর্থিক জরিমানা ও কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ২৭ কোটি ৬১ লাখ ৫১ হাজার ১শ’ টাকার আর্থিক জরিমানা আদায় করেছে বলে জানান তিনি।

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে তারা ‘নো কমপ্রোমাইজ’ নীতি অনুসরণ করে অভিযান জোরদার করেছেন। আগে প্রয়োজনীয় জনবলের সংকট থাকায় সীমিতভাবে অভিযান চালালেও বর্তমানে কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়ায় অভিযান জোরদার হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত যত অভিযান পরিচালিত হয়েছে তার মধ্যে ২০১৫ সাল প্রথম স্থানে রয়েছে। কেননা এ বছরই সর্বোচ্চ সংখ্যক ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা ও সর্বোচ্চ ২২ কোটি ৩৪ লাখ ৮৮ হাজার ৪শ’ টাকা আর্থিক জরিমানা আদায় করা হয়। এ সময় ৩১ জনকে সাতদিন থেকে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, ১২ ওষুধের কারখানা, ৪৪ ফার্মেসি ও ৪ গোডাউন সিলগালা করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে (গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাকটিস) নীতিমালা অনুসারে ওষুধ উৎপাদন করা অত্যাবশ্যক। কিন্তু বাস্তবতা হলো এখনও অনেক কোম্পানি জিএমপির নীতিমালা অনুসরণ করছে না।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির নির্দেশনায় গঠিত কমিটির সদস্য হিসেবে সারাদেশের ওষুধ কোম্পানি পরিদর্শনকালে তারা যে সকল কোম্পানি জিএমপি নীতিমালা অনুসরণ করছে না তাদের তালিকা তৈরি করেছিলেন বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ওষুধ আর দশটা মনিহারি পণ্য নয়। ওষুধের গুণগত মানের সঙ্গে অপোস করলে জনগণের স্বাস্থ্যহানি ঘটাবে।

এমইউ/এএইচ/এসএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।