৮ বেডে ৪৩ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালটির শিশু ওয়ার্ডে মাত্র আটটি বেড সরকারিভাবে বরাদ্দ রয়েছে। এর অধীনে বর্তমানে ৪৩ জন নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু ভর্তি করা হয়েছে। পরবর্তীতে শিশু রোগীর চাপের কারণে আরও সাতটি বেডের ব্যবস্থা করায় বর্তমানে বেডের সংখ্যা ১৫টিতে দাঁড়িয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, গত জানুয়ারি মাসে ৯৮, ফেব্রয়ারি মাসে একশো, মার্চ মাসে ৮২, এপ্রিল মাসে ৪৩, মে মাসে ৪১, জুন মাসে ২৫, জুলাই মাসে ৫৩, আগস্ট মাসে ৭৩, সেপ্টেম্বর মাসে ৪৮, অক্টোবর মাসে ৫৭ ও নভেম্বর মাসে ৭৬ শিশুসহ সর্বমোট ৬৯৬ শিশু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে জুলাই মাসে ছয়জন ও সেপ্টেম্বর মাসে দুই শিশুসহ মোট আটজনের মৃত্যু হয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আনোয়ারুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত কারণে এ রোগ দেখা দিয়েছে। শিশুদের ঠাণ্ডা লাগানো যাবে না। তাদের সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে হবে। মায়েদের সচেতনতার অভাবে শিশুরা ঠাণ্ডায় এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আছে।
আক্রান্ত শিশুদের অভিভাবকরা জানান, প্রতি বেডে তিনজন করে শিশুকে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অনেকে আবার মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে। স্বল্প জায়গায় এত শিশুর চিকিৎসা দিতে গিয়ে নার্স ও চিকিৎসকরা যেমন হিমশিম খাচ্ছেন ঠিক তেমনি নাজেহাল হচ্ছেন শিশুদের অভিভাবকরা। বর্তমানে হাসপাতালটিতে দুজন শিশু বিশেষজ্ঞের স্থানে একজন কর্মরত রয়েছেন।
অভিভাবকরা আরও বিছানা বাড়ানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত চিকিৎসক ও নার্সের ব্যবস্থা করার দাবি করেন।
নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত এক শিশুর অভিভাবক জাগো নিউজকে বলেন, নিউমোনিয়া রোগের সব ওষুধ হাসপাতালে পাওয়া যায় না। এ রোগের ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়। এজন্য ওষুধের ব্যয়ভার বহন করা তাদের জন্য দুরূহ হয়ে পড়েছে।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. স্বপন কুমার কুণ্ডু জাগো নিউজকে জানান, ঝিনাইদহে ঠাণ্ডাজনিত নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় শিশু রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। জেলার ছয়টি উপজেলা থেকে প্রতিদিন শতাধিক রোগীকে সদর হাসপাতালে বহির্বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে চিকিৎসক স্বল্পতা, অপ্রতুল সযোগ-সুবিধার কারণে প্রতিদিনের বাড়তি রোগীর চাপ সামাল দিতে জেলার সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছেন। বর্তমানে হাসপাতালটিতে দুজন শিশু বিশেষজ্ঞের স্থানে একজন কর্মরত রয়েছেন।
এছাড়া জেলার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশু ও বিভিন্ন বয়সের মানুষ চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে অনেকে মারাও গেছে।
আহমেদ নাসিম আনসারী/এমজেড/এমএস