পতাকা উড়াতে গিয়ে বিদ্যুতস্পৃষ্ট শাহিন মৃত্যুশয্যায়


প্রকাশিত: ০৮:৩২ এএম, ১১ ডিসেম্বর ২০১৫

বিশ বছরের টগবগে তরুণ শাহিন। তেজগাঁও লিঙ্ক রোডের ১৮৯/৩ বাসার বাসিন্দা পারভেজ রহমানের বাড়িতে কেয়ারটেকারের চাকরি করে। আসন্ন ১৬ ডিসেম্বর ‘বিজয় দিবস’ জাকজমকপূর্ণভাবে পালন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে দোতলা বাড়ির ছাদে জাতীয় পতাকা উড়াতে গিয়েছিল। নিরাপত্তা প্রহরী ভরদুপুরে ছাদে উঠতেও নিষেধ করলেও শাহিন হেসে বলেছিল- আরে ভাই, দেরি করবো না, পতাকা উড়িয়েই নেমে পড়বো।

কিন্তু লম্বা লোহার রোডে পতাকা বেঁধে উচু করতেই ছাদের কাছাকাছি থাকা বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয় শাহিন। বিকট শব্দে দূরে ছিটকে পড়ে মাথায় প্রচন্ড আঘাতে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটে। বিদ্যুতায়িত হয়ে ঝলসে যায় সারা শরীর। মুমূর্ষু অবস্থায়  উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসলেও বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাষ্টিক সার্জারিতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে শাহিন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শাহিনের শরীরের ৩০ ভাগ পুড়ে গেছে।

শুক্রবার সকালে ঢামেক বার্ন অ্যান্ড প্লাষ্টিক সার্জারিতে দেখা যায়, নীচতলার অবজারবেশন ওয়ার্ডে মাথা, হাত ও বুকে সাদা ব্যান্ডেজে মোড়ানো শাহিন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। মুখমন্ডল পুড়ে কালো হয়ে গেছে। শয্যাপার্শ্বে স্যালাইন চলছে। তবে কক্ষটিতে ডাক্তার ও নার্সের দেখা মেলেনি।

শাহিনের স্বজনরা অভিযোগ করেন, এত বড় বার্ন হাসপাতালে স্যালাইন পুশ করার জন্য নার্স খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রায় সব ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। ডাক্তার ও নার্সের ব্যবহারও ভালো নয়। শুধু শুনি সরকারি হাসপাতালে ওষুধপত্র ফ্রি কিন্তু বাস্তবে দেখি উল্টো।

শাহিনের বিদ্যুতস্পৃষ্ট হওয়ার খবর শুনে নীলফামারির জেলার ডোমার থানার খিরাহাটি গ্রাম থেকে ছুটে এসেছেন ছোট ভাই ওমর ফারুক। সে জানায়, তাদের মা বেঁচে নেই। বাবা বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেছেন।

এদিকে বিদ্যুতস্পষ্টতার শিকার ভাই শাহিনকে ডাক্তার কোনো প্রকার চিন্তা করতে বারণ করলেও একটু পর পর ডাক্তারের রুমে ছুটে গিয়ে জানতে চাইছিল- স্যার, আমার ভাইটা বাঁচবে তো?

এমইউ/আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।