সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের হৃদরোগের চিকিৎসা বিনা খরচে


প্রকাশিত: ১০:৩০ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৫

ঢাকা সেনানিবাসস্থ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমইচ) সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের এবং বেসামরিক শিশু রোগীদের জটিল অপারেশনসহ চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে সৌদি আরবের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জামিল আব্দুল আজিজ আল-আতার নেতৃত্বে ২৭ সদস্যের একটি চ্যারিটি টিম।

বৃহস্পতিবার ঢাকা সিএমএইচ-এ আয়োজিত চ্যারিটি মিশনের কার্যক্রম সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এসময় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ফসিউর রহমান, চিফ সার্জন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুন্সী মুজিবুর রহমান, চিফ ফিজিসিয়ান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসকে রুহুল আমিন, উপদেষ্টা শল্য বিশেষজ্ঞ (কার্ডিয়াক সার্জারী) এবং উপদেষ্টা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ (কার্ডিওলজি) উপস্থিত ছিলেন।

দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের হৃদরোগের চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, লিটল হার্ট চ্যারিটি প্রোগ্রাম; সৌদি আরব এবং মুনতাদা এইড ইউকে, যৌথভাবে এই চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম শুরু করেছে। ইতোপূর্বে আরো দুই বার এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এই চ্যারিটির মাধ্যমে অক্টোবর ২০১৪ সালে ৪৯ জন, মার্চ ২০১৫ সালে ১০৭ জনকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। যার মধ্যে ছিল ওপেন হার্ট সার্জারি, হার্টের বিভিন্ন প্রকার ডিভাইস স্থাপন, হার্টের ভাল্বের বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা ও ব্যয় বহুল বিভিন্ন ইন্টারভেনশন। তৃতীয় বারের মত আয়োজিত এই চ্যারিটি চিকিৎসা কার্যক্রম ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। এতে সামরিক ও বেসামরিক সর্বমোট ২০০ জন রোগীকে জটিল হৃদরোগের চিকিৎসা প্রদান করা হবে। এই চিকিৎসা কার্যক্রমে সৌদি চিকিৎসকদের সঙ্গে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের শিশু কার্ডিওলজি, কার্ডিয়াক সার্জারি এবং কার্ডিয়াক এনেসথেসিয়া বিভাগ অংশগ্রহণ করছে।

child
উক্ত টিমের সঙ্গে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুসা খান ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নূরুন নাহার ফাতেমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কার্ডিয়াক সার্জারি দল ও পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট দল কাজ করছেন। বিনামূল্যে চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করাসহ কোনো প্রকার ওটি চার্জ/ক্যাথল্যাব চার্জ ছাড়া সমস্ত রোগীকে সকল ধরনের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এর সঙ্গে সিএমএইচ এর কার্ডিয়াক টিমের চিকিৎসক, নার্স এবং প্যারামেডিকস বিভিন্ন জটিল রোগীর চিকিৎসা কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণ করে উন্নততর প্রশিক্ষণ ও গ্রহণ করছেন।

আলমুনতাদা এইড এবং লিটন হার্ট চ্যারিটি প্রোগ্রাম বাংলাদেশকে তাদের চ্যারিটি কার্যক্রমে অগ্রাধিকার তালিকায় রেখেছে এবং প্রতি বছরই অন্তত দুই বার এই কার্যক্রম চালু রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।

এ দেশের রোগীদের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আলমুনতাদা এইড এবং লিটন হার্ট চ্যারিটি প্রোগ্রাম, সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ এবং তাদের ডাক্তারদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়।

উল্লেখ্য,  পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পরিচালিত জরিপে দেখা যায় জন্মগত হৃদরোগের হার প্রতি হাজারে ৮-১০ জন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের শিশুদের এই রোগের হার দ্বিগুনেরও বেশি। ঢাকা সিএমএইচ পরিচালিত একটি জরিপে দেখা যায় বাংলাদেশে প্রতি হাজারে প্রায় ২৫ জন শিশু হৃদরোগী রয়েছে। জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুদের ৮০ ভাগেরও বেশি দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণীর অন্তর্গত। এ রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয় বহুল হওয়ায় এবং জটিল হৃদরোগীদের বেশির ভাগই বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করানোর সঙ্গতি না থাকায় তারা ধীরে ধীরে অকালে মৃত্যুর মুখে পতিত হয়।

এসএ/একে/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।