থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে কাউন্সেলিং ও বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা জরুরি
থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে ফ্যামিলি কাউন্সেলিং ও বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা জরুরি বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
সোমবার (৩ মে) ‘থ্যালাসেমিয়া রোগ : সচেতনা প্রতিরোধ’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এ কথা বলেন তিনি।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, থ্যালাসেমিয়া একটি জন্মগত ও বংশগত রক্তরোগ। এই রোগে মানুষের শরীরের হিমোগ্লোবিনের গঠন প্রণালীতে ক্রুটি দেখা দেয়। রোগটি প্রতিরোধে জেনেটিক কাউন্সেলিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর রক্ত পরীক্ষা করে নিলে তাদের মাঝে থ্যালাসেমিয়া রয়েছে কি-না তা জানা যাবে। পাত্র-পাত্রীর যদি উভয়ের থ্যালাসেমিয়া থাকে তাহলে তাদের মাঝে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া ঠিক নয়। এক্ষেত্রে তাদের ভবিষ্যৎ সন্তান থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হবে। এ বিষয়ে পরিবারের সকল সদস্যকে সচেতন করতে হবে।
থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে সরকারি উদ্যোগ আরও বাড়াতে হবে বলে উল্লেখ করেন ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য আয়রন চিলেশন থেরাপি চালু রয়েছে। থ্যালাসেমিয়া রোগসহ বিভিন্ন রোগের উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে জিন থেরাপি ও স্টেম সেল থেরাপি চালু করা হবে।
এদিকে উপাচার্য সোমবার তার কার্যালয়ে প্রশাসনিক মিটিং ও শহীদ ডা. মিল্টন হলে সিমুলেশন ল্যাব বিষয়ক সভা এবং নবগঠিত রিসার্চ সাপোর্ট সেলের সভায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কনফারেন্স রুমে চিকিৎসা বিজ্ঞান উপ-শাখায় ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে প্রাপ্ত চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা প্রকল্প প্রস্তাবসমূহ মূল্যায়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির সভায়ও অংশগ্রহণ করেন।
রিসার্চ সাপোর্ট সেলের সভায় শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গবেষণা ও প্রশিক্ষণকে সব সময়ই গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে সম্পূর্ণরূপে ঢেলে সাজানো হবে। রোগ নিরাময়ের নতুন নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবনে এবং কার্যকর ভ্যাকসিন ও ওষুধ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে গবেষণার বিকল্প নেই।
সিমুলেশন ল্যাব বিষয়ে উপাচার্য বলেন, এ ধরনের ল্যাব স্বাস্থ্য শিক্ষাখাতের আধুনিকায়নের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও তরুণ চিকিৎসকেরা রোগীর শরীরে অপারেশনের পূর্বে কৃত্রিম মানবদেহের উপর প্র্যাকটিস করার সুযোগ পাবে। যা তাদেরকে দক্ষ চিকিৎসক হিসেবে গড়ে তুলবে এবং রোগীরা নির্ভুল চিকিৎসা পাবেন।
এদিকে উপাচার্য কার্যালয়ে হেলথ রাইটার্স ফোরাম অব বাংলাদেশের সভাপতি ডা. আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার এবং সমকাল সুহৃদ সমাবেশের পক্ষে সহকারী সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম আবেদ বিএসএমএমইউয়ের নব নিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় তারা স্বাস্থ্যখাতের ইতিবাচক ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করতে পারস্পরিক সহযোগিতা ও যৌথভাবে কাজ করার কথা উল্লেখ করেন।
এমইউ/জেডএইচ/জেআইএম