৫০ বছরেও চাঁদপুর বক্ষব্যাধি ক্লিনিক আধুনিক হয়নি
চাঁদপুর জেলার একমাত্র বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। বরং ক্লিনিকের মূল ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। এক্সরে মেশিনটি নষ্ট। কোনো অ্যাম্বুলেন্স নেই। লোকবল সঙ্কট। ডাক্তার ও কর্মচারীদের আবাসিক ভবন নেই।
সর্বোপরি চাঁদপুরবাসীর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বক্ষব্যাধি ক্লিনিকটি দীর্ঘ ৫০ বছরেও হাসপাতালে উন্নীত করা হয়নি। এসব সমস্যা নিয়েই ক্লিনিকের কার্যক্রম চলছে। ফলে রোগীরা সঠিক সেবা পাচ্ছেন না। বাহির থেকে এক্সরেসহ সকল কিছু করিয়ে নিতে হয় রোগীদের।
বক্ষব্যাধি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জাগো নিউজকে জানান, ১৯৬৫ সালে এ ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু হয় এবং আউটডোরে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। বর্তমানে ক্লিনিকে লোকবল সঙ্কট রয়েছে। সিনিয়র কনসালট্যান্ট পদ রয়েছে একটি। কিন্তু এখানে দুজন কনসালট্যান্ট প্রয়োজন। তাই একটি পদ সৃষ্টি করতে হবে। মেডিকেল অফিসারের পদ রয়েছে একটি। দুটি পদ সৃষ্টি করতে হবে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদ রয়েছে পাঁচটি। কিন্তু বর্তমানে চারটি পদেই নারী।
ক্লিনিকের মূল ভবনের বয়স ৫০ বছরেরও অধিক। যার জন্য ভবনের ছাদের ও দেয়ালের আস্তর খসে খসে পড়ছে। ছাদ দিয়ে পানি পড়ছে। বাথরুম ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। ভবনটি মেরামত বা নতুন করে ভবন নির্মাণের জন্য গণপূর্ত বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ক্লিনিকের ভেতরে জায়গা থাকা সত্ত্বেও ডাক্তার কর্মচারীদের আবাসন নির্মাণ করা হচ্ছে না। এ কারণে ডাক্তার কর্মচারীদের বাসা ভাড়া থাকতে হচ্ছে এবং সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ক্লিনিকের ডাক্তারদের বেশীরভাগ সময়ই ফিল্ড ওয়ার্ক করতে হয়। কিন্তু এখানে কোনো অ্যাম্বুলেন্স নেই। একমাত্র মোটরসাইকেলটিও ব্যবহার অযোগ্য হয়ে নষ্ট হচ্ছে।
বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের রোগীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এক্সরে। কিন্তু এ ক্লিনিকের একমাত্র এক্সরে মেশিনটি ২৬ জুলাই থেকে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। মেরামতের জন্য নিমিউ এর চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে লেখা হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনাে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এ ক্লিনিকের প্রবেশদ্বারও ভেঙে আছে। এ বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে নেই কোনো কম্পিউটার। এ ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা সুফিয়া খাতুন, মনোয়ারা বেগম, ছিডু গাজী, ওমেদ মিয়া জাগো নিউজকে জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলে লাভ হয় না। সব কিছুই টাকা দিয়া বাইরে থেকে করতে হয়। অথচ সরকার কইছে যক্ষ্মা চিকিৎসায় কোনো পয়সা লাগে না। হাসপাতালে আইলে মনে হয় সরকারের এসব কথা মিথ্যা।
বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মো. জহিরুল হক জাগো নিউজকে জানান, ক্লিনিকের বহু সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যা দ্রুত সমাধান প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে জানানো হয়েছে। এ ক্লিনিকে যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগী ছাড়াও প্রতিদিন ৪০/৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এরমধ্যে গড়ে ৬.২ জন রোগীর যক্ষ্মা জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া এ ক্লিনিক থেকে বক্ষব্যাধির ১৪ রকম ওষুধ সেবা দেয়া হয়। ক্লিনিকের এক্সরে মেশিনটি নষ্ট থাকায় রোগীদের জরুরী প্রয়োজনে বাহির থেকে এক্সরে করতে হচ্ছে।
এমজেড/আরআইপি