পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর সঙ্গে আর্সেনিকের সম্পর্ক রয়েছে!


প্রকাশিত: ০১:১১ পিএম, ১২ নভেম্বর ২০১৫

মাতৃগর্ভে থাকাকালীন সময়ে মায়ের ওপর আর্সেনিকের প্রভাব শিশুদের পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কিত বলে ধারণা করছেন আইসিডিডিআর’বির গবেষকরা। আইসিডিডিআর`বি, ব্র্যাক এবং কানাডার ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটির গবেষকরা আইসিডিডিআরবি`র মতলব ফিল্ড সাইটে একটি অনুসন্ধানমূলক গবেষণা শেষে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশুরা মাতৃগর্ভে থাকাকালীন সময়ে আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়েছিল, তা তাদের স্বতঃস্ফূর্ত চলাচলের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে থাকতে পারে। যার ফলে পানিতে ডোবার ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়।

জানা যায়, গবেষকরা ২০০২ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ১১ হাজার ৪১৪ জন মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়া শিশুদের জন্ম ও মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করেন এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার ১৩ হাজারেরও অধিক টিউবওয়েলের পানির আর্সেনিকের ঘনত্ব পরীক্ষা করেন। জন্মের পর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুদেরকে পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখেন। তবে, গবেষণায় কিছু সম্ভাব্য ঝুঁকির কারণ যেমন- সঠিক তত্ত্বাবধানের অভাব, অরক্ষিত জলাধার ইত্যাদি বিবেচনায় রাখা হয়নি।

পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গেছে, আর্সেনিক গর্ভ-ফুল বা প্লাসেন্টা ভেদ করে গর্ভের সন্তানকে আক্রান্ত করতে পারে। আর্সেনিক বুদ্ধিবৃত্তিক ও স্নায়ুর বিকাশ ব্যাহত করে। বাংলাদেশের ৩ দশমিক ৫ কোটিরও অধিক মানুষ যে পানি ব্যবহার করছে তাতে আর্সেনিকের ঘনত্ব দেশের জাতীয় মান এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত মাত্রার চেয়ে বেশি।

বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও আঘাত-সংক্রান্ত এক জরিপে দেখা যায়, প্রতিদিন ৫০ জন এবং প্রতিবছরে ১৮ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। বেশিরভাগেই বয়স ১ থেকে ৪ এর মাঝে (প্রতি ১ লক্ষে ৮৬ দশমিক ৩ জন), যে সময়ে তারা হাঁটা শুরু করে এবং তত্ত্বাবধানের আওতা থেকে বেরিয়ে পরে।

নিবন্ধের প্রধান গ্রন্থকার ব্র্যাক-এর গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের প্রধান এবং আইসিডিডিআর`বির প্রাক্তন গবেষক ড. মাহফুজার রহমান বলেন, "ভবিষ্যতে পানিতে ডোবা প্রতিরোধ প্রকল্প পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের জন্য এই গবেষণার ফলাফল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। অভিষ্ট ফলাফল হয়ত অর্জন করা সম্ভব হবে না, যদি না গর্ভাবস্থায় আর্সেনিকের প্রভাব কমানো যায়।"

এমইউ/আরএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।