বিএসএমএমইউতে শয্যাশায়ী রোগীদের জন্য চালু হলো হোম কেয়ার প্রকল্প

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৪:৪০ পিএম, ২৮ আগস্ট ২০১৯

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ই-ব্লকে নিরাময় অযোগ্য ও শয্যাশায়ী রোগীদের জন্য গৃহসেবা কার্যক্রম (হোম কেয়ার) প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে।

বুধবার (২৮ আগস্ট) এ প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।

অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্সসহ সবাইকে মন নিয়ে রোগীদের সেবা দেয়ার জন্য আহ্বান জানান।

নিরাময় অযোগ্য ও শয্যাশায়ী রোগীরা এই সেবা নিতে প্যালিয়েটিভ মেডিসিন বহির্বিভাগের ৫১১ নম্বর কক্ষে যোগাযোগ করতে পারবেন।

সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ারের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. জিলন মিঞা সরকার, অধ্যাপক ডা. নিজাম উদ্দীন আহমেদ প্রমুখ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ার ২০০৮ সাল থেকে নিরাময় অযোগ্য ও শয্যাশায়ী রোগীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে সপ্তাহে ৫ দিন ডাক্তার, নার্স, প্যালিয়েটিভ কেয়ার সহকারীর (পিসিএ) সম্মিলিত একটি প্রশিক্ষত দল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে রোগীদের বাসায় গিয়ে সেবা দিয়ে আসছে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদানকৃত এই সেবা চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের সংগঠন ও মানুষের ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন গৃহসেবা প্রকল্পকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কর্মকাণ্ডের আওতায় নেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিরাময় অযোগ্য রোগীদের দ্বারপ্রান্তে চিকিৎসাসেবা সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার ইতিহাসে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এটা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া এই গৃহসেবা প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

উল্লেখ্য, অসুস্থ ব্যক্তি যদি কোনো কারণে সেবা নেয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে না পারেন তাহলে হোম কেয়ার প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনে তার কাছে যাবে। প্যালিয়েটিভ কেয়ার সেবা প্রয়োজন এমন অনকে রোগীই বিভিন্ন কারণে হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারনে না। শয্যাশায়ী, হাসপাতালে দিয়ে যাওয়ার কেউ না থাকা আবার কখনও আর্থিক দুরবস্থার কারণে তারা হাসপাতালে যান না। এ ছাড়া অনেক সময় হাসপাতালের চাইতে বাসায় সেবা প্রদান অনেক বেশি দরকার হয়ে পড়ে। এদের ভেতর আবার অনেকেই সম্পূর্ণ শয্যাশায়ী তীব্র ব্যথা অথবা শ্বাসকষ্ট নিয়ে বাসায় পড়ে থাকেন। অধিকাংশই অর্ধচেতন অথবা অচেতন হয়ে শুধুমাত্র পরিবারের সীমিত অদক্ষ সেবা ও পরিচর্চার ওপর নির্ভরশীল থাকেন। নিরাময় অযোগ্য রোগের চিকিৎসা সেবাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট এসব জটিলতাকে যতটা সম্ভব সহজ করার মাধ্যমে রোগী ও তার পরিবারের জীবনযাত্রা গুণগতমান বৃদ্ধিতে প্যালিয়েটিভ গৃহসেবা গুরুত্ব অপরিসীম। এ সেবার উদ্দেশ্য রোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের দৈনন্দিন কষ্টগুলোকে কমিয়ে আনা এবং জীবনের মান উন্নয়নে সহায়তা করা।

একই সঙ্গে হোম কেয়ার প্রদানের সময় পরিবারের সদস্যদেরকে সেবা ও পরিচর্যার মৌলিক দক্ষতাগুলো হাতে-কলমে শিখিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়।

এমইউ/এসআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।