খুলেছে বিএসএমএমইউর বহির্বিভাগ, কমেছে ডেঙ্গু রোগী
সাধারণ রোগীদের সুবিধার্থে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) খুলেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বহির্বিভাগ। আগামীকালও (বুধবার) বহির্বিভাগ খোলা থাকবে। আর ১৫ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বহির্বিভাগে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অর্থাৎ অধ্যাপকরা বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেবেন।
জাতীয় শোক দিবসের দিন রোগীদের কয়েকটি রুটিন পরীক্ষা-নিরীক্ষাও বিনামূল্যে করা হবে। জাতীয় দিবসে অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বনানী কবরস্থানে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামালের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ১৫ আগস্টে শাহাদাতবরণকারী সব শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাত, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্বেচ্ছায় রক্তদান এবং বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরানখানি, মিলাদ-মাহফিল। এ ছাড়াও রয়েছে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনা অনুষ্ঠান।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বহির্বিভাগ-১ ও বহির্বিভাগ ২ এবং কেবিন ব্লকের নিচতলায় ডেঙ্গু সেলের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
তিনি রোগীদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন এবং চিকিৎসক, নার্স ও সহযোগী স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, অ্যানেসথেসিয়া, এনালজেশিয়া অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কে এম আখতারুজ্জামান, হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ, নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হারাধন দেবনাথ, অতিরিক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. নাজমুল করিম মানিক প্রমুখ।
রাউন্ড শেষে দুপুর ১২টায় কেবিন ব্লকের সামনে সংক্ষিপ্ত প্রেসব্রিফিংয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ডেঙ্গু সেলের সর্বশেষ তথ্য সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
তিনি জানান, গতকাল সকাল ৮টা থেকে আজ (১৩ আগস্ট) সকাল ৮টা পর্যন্ত অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা হলো ১৪০ জন। এর মধ্যে নতুন ভর্তি রোগী ২২ জন। আগে রোগী ভর্তি ছিল ১১৮ জন। গত ২৭ জুলাই থেকে আজ মঙ্গলবার ১৩ আগস্ট সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু চিকিৎসা সেলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৬৩৯ রোগী ভর্তি হয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৪৯৭ জন। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২২ জন। মেডিসিন ওয়ার্ড, শিশু ওয়ার্ড, ডেঙ্গু চিকিৎসা সেল, কেবিন, আইসিইউ ও এইচডিইউতে এ সব রোগী ভর্তি আছেন। বর্তমানে আইসিইউতে ১ জন এবং এইচডিইউতে ৬ জন রোগী ভর্তি আছেন।
চলতি বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বহির্বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৫৩০০ জন রোগী সেবা নিয়েছেন।
উপাচার্য আরও বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্তের হার একটু কমতির দিকে। পূর্বের তুলনায় রোগীর ভর্তির সংখ্যা একটু কমেছে। ডেঙ্গুজ্বরের বিষয়ে গণমানুষের সচেতনতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য গণমাধ্যগুলো বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। আর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় চিকিৎসক, নার্স ও সহযোগী স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছেন এবং তা অব্যাহত আছে ও থাকবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট, টেকনিশিয়ান সহযোগী স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
এমইউ/এনডিএস/এমএস