৪৪ হাজার ছাড়াল ডেঙ্গু রোগী, সুস্থ ৮৩ শতাংশ

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৪:০৩ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০১৯

রাজধানীসহ সারাদেশে চলতি বছর ৪৪ হাজার নারী, পুরুষ ও শিশু এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮৩ শতাংশ ইতোমধ্যেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ২০০ জন।

এর আগের দু’দিন অর্থাৎ পূর্ববর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ২ হাজার ৩৪৪ জন এবং ২ হাজার ৯৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, গত ১০ দিনে সারাদেশে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার হার ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। এ ছাড়া গত তিন দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও কমছে।

dangue-4.jpg

ফলে সম্প্রতি রাজধানীসহ সারাদেশে জনমনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার যে আতঙ্ক বিরাজ করছিল তা ধীরে ধীরে কাটছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে যাবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ আগস্ট (মঙ্গলবার) পর্যন্ত সারাদেশের হাসপাতালে সর্বমোট ৪৪ হাজার ৪৭১ জন ডেঙ্গু জ্বরের রোগী ভর্তি হন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩৬ হাজার ৮৮৪ জন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার বাইরেও মোট ১৫ হাজার ৪০১ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৭৮ শতাংশ অর্থাৎ ১১ হাজার ৯৬৮ জন।

১১ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট (আগের দিনের তুলনায়) আজ ১৩ আগস্ট ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সর্বমোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা যথাক্রমে ২ ও ১০ শতাংশ কমেছে।

dangue-4.jpg

গত ২৪ ঘণ্টায় (১২-১৩ আগস্ট) নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ২০০ জন যা গতকালের তুলনায় ৪৩ শতাংশ কম। ঢাকায় নতুন রোগী ভর্তির হার ২৯ শতাংশ এবং ঢাকার বাইরে নতুন রোগী ভর্তির হার ৫২ শতাংশ কমেছে। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা ৪০ জন।

এদিকে আজ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ কুর্মিটোলা ও কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শক দল পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির মাঝেও ডেঙ্গুসহ সব প্রকারের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। আজও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের পর্যবেক্ষক দলের হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম তদারকি অব্যাহত রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

রোগ নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা ঈদর ছুটি শেষে বাড়ি ফেরার পর ডেঙ্গু প্রতিরোধে ছোট ছোট কিন্তু খুবই জরুরি কাজগুলো করার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

dangue-4.jpg

নির্দেশনাসমূহ :

যাদের বাড়িতে মশা নিধনের স্প্রে আছে :
একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তি ঘরের মেইন দরজা খুলে ঘরে ঢুকবেন এবং দরজা-জানালা বন্ধ অবস্থায় ঘরের আনাচে কানাচে, পর্দার পেছনে, খাটের নিচে স্প্রে করবেন। কোনোভাবেই রুমে শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি এবং গর্ভবতীদের প্রথমে ঘরে ঢুকতে দেবেন না।

মশার স্প্রে ব্যবহারের পর প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ঘর থেকে বেরিয়ে যাবেন এবং আধাঘণ্টা অপেক্ষা করবেন। আধাঘণ্টা পর আবার ঘরে ঢুকে সব দরজা-জানালা খুলে দেবেন। কমোড ফ্ল্যাশ করবেন, বেসিনের ট্যাপ ছেড়ে দেবেন।

যাদের বাড়িতে মশা নিধনের স্প্রে নেই :

সবাই একসঙ্গে ঘরে না ঢুকে প্রথমে একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তি রুমে ঢুকে সব দরজা জানালা খুলে দেবেন। সব ফ্যানগুলো ছেড়ে দেবেন। কমোড ফ্ল্যাশ করবেন, বেসিনের ট্যাপ ছেড়ে দেবেন। এ কাজগুলো সম্পন্ন করার পর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ঘরে প্রবেশ করবেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরে আজ সর্বশেষ ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন-রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা, ডা. সমীর কান্তি সরকার, পরিচালক এমআইএস, ডা. সত্যকাম চক্রবর্তী, লাইন ডাইরেক্টর হাসপাতাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট, ডা. মো. শামসুল হক, লাইন ডাইরেক্টর এমএনসিএএইচ, ডা. মো. এহসানুল করিম, লাইন ডাইরেক্টর স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো, ডা. আয়শা আক্তার, সহকারী পরিচালক কন্ট্রোল রুম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এমইউ/এনডিএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।