জুলাইয়ে রেকর্ডসংখ্যক ১৫ হাজার ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৫:৫৬ পিএম, ৩১ জুলাই ২০১৯

রাজধানীসহ সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আগের সব রেকর্ড ভাঙছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪৭৭ অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ৬২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

বাংলাদেশের ইতিহাসে গত বছর ২০১৮ সালে রেকর্ডসংখ্যক ১০ হাজার ১৪৮ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন। চলতি বছরের এখনও পাঁচ মাস বাকি থাকতেই আজ (৩১ জুলাই) পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে রেকর্ডসংখ্যক ১৭ হাজার ১৮৩ রোগী ভর্তি হয়েছেন। শুধু চলতি জুলাই মাসে ইতিহাসের সর্বোচ্চ প্রায় ১৫ হাজার (১৪ হাজার ৯৯৬ জন) ডেঙ্গু রোগী সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

চলতি বছর হাসপাতালে ভর্তি মোট রোগীর মধ্যে ইতোমধ্যে চিকিৎসক ও নার্সসহ সবার আন্তরিক সেবা ও প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১২ হাজার ২৬৬ জন। বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৯০৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেল্থ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কয়েক দিন ধরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ তথ্য, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) তথ্য অনুসারে গতকাল পর্যন্ত আটজন মৃতের কথা বলা হলেও আজ (৩১ জুলাই) মৃতের সংখ্যা ১৪ বলে জানিয়েছে। তবে বেসরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়েছে। আইইডিসিআর এর তথ্য অনুসারে ১৪ জন মৃতের মধ্যে এপ্রিলে দুজন, জুনে দুজন ও চলতি জুলাই মাসে ১০ জন মারা গেছেন।

ডেঙ্গু বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা আগস্ট মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গু মশার প্রজনন বাড়তে পারে। তারা জরুরি ভিত্তিতে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাজধানীসহ সারাদেশে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

child-3.jpg

গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ভর্তি ১ হাজার ৪৭৭ রোগীর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫৫, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৬২, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ২৬, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৭৩, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ৩৭, বারডেম হাসপাতালে ১৩, বিএসএমএমইউতে ৩৫, পুলিশ হাসপাতাল রাজারবাগে ৩২, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫২, বিজিবি হাসপাতাল পিলখানায় ৭ ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৭৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।

এ ছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩৬০ জন।

এদিকে রাজধানীর বাইরেও বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫৪৯। ঢাকা বিভাগে ১১২, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৬, খুলনা বিভাগে ১০৮, রংপুর বিভাগে ৩১, রাজশাহী বিভাগে ৬১, বরিশাল বিভাগে ২২, সিলেট বিভাগে ২৯ ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৮০ ভর্তি হয়েছেন।

বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি ৩৬০ জন রোগীর মধ্যে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ৩২, ইবনে সিনা হাসপাতাল ধানমন্ডিতে ১৬, স্কয়ার হাসপাতাল ধানমন্ডিতে ১১, শমরিতা হাসপাতাল পান্থপথে ২৬, ল্যাবএইড হাসপাতালে ৫, সেন্ট্রাল হাসপাতাল ধানমন্ডিতে ৩২, হাই কেয়ার হাসপাতালে ৭, হেল্থ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ২, গ্রীন লাইফ মেডিকেল হাসপাতালে ১৯, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল কাকরাইলে ২০, ইউনাইটেড হাসপাতালে ১৫, খিদমাহ হাসপাতাল খিলগাঁওয়ে ৩, সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮, অ্যাপোলো হাসপাতালে ১৫, আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৪, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫, বিআরবি হাসপাতালে ১০, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৯, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৭, সালাউদ্দিন হাসপাতালে ১৬, পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৭ ও আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।

এমইউ/এনডিএস/এমএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।