বিএসএমএমইউর নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেল (বিএসএমএমইউ) অফিসার নিয়োগে আট অভিযোগ উত্থাপন করেছেন কর্মরত শিক্ষক-কর্মকর্তারা। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলসহ তদন্ত কমিটি গঠন করার দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে উপাচার্যের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।
শনিবার বিএসএমএমইউর শিক্ষক মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এ সময় বিএসএমএমইউ’র সহযোগী অধ্যাপক ডা. আহসান হাবীব হেলাল, ডা. বিজয় কুমার পাল, সহকারী অধ্যাপক ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারর্দার টিটুসহ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএস) নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে স্বাচিপ নেতা ডা. আহসান হাবীব হেলাল বলেন, ‘সম্প্রতি বিএসএমএমইউতে মেডিকেল কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্তরে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার মধ্যে সন্দেহজনকভাবে পরীক্ষার ফল প্রকাশের দীর্ঘসূত্রিতা করা, অনৈতিক উপায়ে স্বজনপ্রীতি করে পাশ করিয়ে দেয়া, প্রশ্নফাঁস, প্রার্থীর বয়স সংক্রান্ত দুর্নীতি, প্রবেশপত্রে রোল নম্বর জালিয়াতি, ভিন্ন প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা, ফলাফল প্রকাশের আগেই কথিত তালিকা প্রকাশ ও পরীক্ষা কেন্দ্রে অসদুপায় অবলম্বন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘স্বজনপ্রীতি করে ভিসির সন্তান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের মেয়ের জামাতা, উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী-২ এর সহধর্মিণীসহ অনেকেই প্রথম সারিতে রয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। পরীক্ষার পূর্বেই প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলার বিষয়টি স্বয়ং উপাচার্য স্বীকার করেছেন। সেখান থেকে আমাদের সন্দেহ হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিয়োগ পরীক্ষায় নানা ধরনের অভিযোগ ওঠার বিষয়টি উপাচার্যকে তদন্ত করার সুপারিশ করলেও তিনি পরীক্ষা চালিয়ে গেছেন। গত ১১ জুন উল্টো পুলিশ ও আনসার দিয়ে দায়িত্বরত শিক্ষক ও মেডিকেল কর্মকর্তাদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। প্রতিবাদ করতে গেলে আমাদের লাঠিপেটা করা হয়।’
তিনি বলেন, ওইদিন রাতে আমাদের ১৭ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষক-কর্মকর্তারা দুই দফা দাবি জানিয়েছেন।’
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিএসএমএমইউতে চলমান মেডিকেল কর্মকর্তা নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে একটি দতন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন প্রকাশের পর নিয়োগ কার্যক্রম চালু, এবং শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
এই দাবিতে আগামীকাল রোববার দুপুর ১২টায় উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হবে। তবে এ কর্মসূচি পালনে রোগীদের হয়রানি ও ক্লাস বর্জন করা হবে না বলেও জানান স্বাচিপ নেতারা।
স্বাচিপ নেতা ও বিএসএমএমইউর সহযোগী অধ্যাপক ডা. বিজয় কুমার পাল বলেন, ‘নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম হওয়ায় ছোট ভাইরা প্রতিবাদ জানিয়েছে। কিন্তু ভিসি ক্যাম্পাসের মধ্যে পুলিশ-আনসার মোতায়েন করে আমাদের কর্মস্থলে প্রবেশ রূদ্ধ করেন। প্রতিবাদ করলে আমাকে অমানবিকভাবে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। শুধু তাই নয়, সেদিন রাতেই আবার আমাদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর মামলা করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও আওয়ামী লীগের সৈনিক হয়েও শারীরিক নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’ দাবি আদায় না হলে প্রয়োজনে এ আন্দোলন ভিসি পদত্যাগ পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারেন বলেও মন্তব্য করেন।
এমএইচএম/এমআরএম/জেআইএম