বিএসএমএমইউতে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ করেছে বলে জানা গেছে। ঈদের ছুটির পর আজ (রোববার) বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা আগামীকাল ১০ জুন (সোমবার) থেকে অনুষ্ঠিতব্য মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে মিছিল বের করে ও নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় গ্রহণের দাবি জানিয়ে স্লোগান দেন।
এ সময় তারা উপাচার্যের কার্যালয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। ফলে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক আহত হন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে রেজিস্ট্রারের কক্ষের সামনে থেকে পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনাকে বিক্ষোভকারী চিকিৎসকদের নাশকতা বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। ১০ জুন অনুষ্ঠিতব্য চিকিৎসক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা বানচালের অপচেষ্টা হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
চিকিৎসকরা অভিযোগ করেন, ‘আমরা শুধু ভিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি। কিন্তু উনি পুলিশ ও আনসার ব্যবহার করে আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছেন।’
সরেজমিনে দেখা যায়, চিকিৎসকরা ভিসির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। সেখানে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ বিএসএমএমইউতে ২০০ চিকিৎসক নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রকাশিত হয়। ১৮০ জন মেডিকেল অফিসার ও ২০ জন ডেন্টাল চিকিৎসক পদে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ৮ হাজার ৫৫৭ জন চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেন।
লিখিত পরীক্ষায় এক পদের জন্য চারজন পাস করেন। এ হিসাবে ৭১৯ জন মেডিকেল অফিসার ও ডেন্টালের ৮১ জন মিলে মোট ৮২০ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। চূড়ান্ত নিয়োগের লক্ষ্যে তাদের ৫০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হবে বলে জানানো হয়।
কিন্তু ফলাফল ঘোষণার পরপরই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ‘সুযোগবঞ্চিত’ চিকিৎসকরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন দেয়ালে ‘ছেলের জন্য সাজানো নিয়োগ, লজ্জা, ভিসি লজ্জা, ভিসির পদত্যাগ চাই!, অর্থের বিনিময়ে এ নিয়োগ মানি না, মানবো না, প্রশ্নফাঁসের এ নিয়োগ কাদের জন্য, আমাদের সংগ্রাম চলছে, চলবে’- স্লোগান লেখা পোস্টার সেঁটে দেন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের দাবি, সঠিক নিয়ম মেনে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। কোনো অনিয়ম হয়নি।
এর আগেও ফলাফল প্রকাশের পর তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সম্পূর্ণ মেধারভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে। মেধাবীরাই চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ পাবেন। এ ক্ষেত্রে কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করা হবে না।’
এমইউ/এইউএ/এসএইচএস/এমএস