নারীর ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স ভালো হয় ফিজিওথেরাপিতে
ফিজিওথেরাপি নিয়মিত করানোর ফলে নারীদের প্রস্রাব ঝরে পড়ার (ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স) প্রবণতা সম্পূর্ণভাবে ভালো হয়ে যায়। বাংলাদেশে পরিচালিত এক গবেষণায় বিষয়টি উঠে এসেছে।
সম্প্রতি গবেষণাটি করে সাভারে অবস্থিত গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কানাডার আলাবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) গুলশান-২ এর হোটেল লেকশোর লা ভিতা হলে এক সেমিনারে গবেষণার ফল তুলে ধরা হয়। ‘ম্যানেজিং ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স ইন ইল্ডার্লি ভিলেজ ওমেন ইন রুরাল বাংলাদেশ : এ ক্লাস্টার র্যান্ডমাইজড ট্রায়াল অব এ কমিউনিটি এক্সারসাইজ-বেজড ইন্টারভেনশন’ শীর্ষক এ সেমিনারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি অধ্যাপক আবুল কাসেম চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্স সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী সভাপতি ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।
সেমিনারের শুরুতে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপনা করেন কানাডার আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিভেনটিভ মেডিসিনের অধ্যাপক নিকোলা চেরী এবং জেরিয়েট্রিক মেডিসিন অধ্যাপক আদ্রিয়ান ওয়াগ। তারা বলেন, গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র ও আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে চার বছর মেয়াদি গবেষণা কাজটি সম্পন্ন হয়েছে।
গবেষণাটি গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্ম এলাকার গাইবান্ধা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, শেরপুর, পাবনা গাজীপুর ও ভোলা জেলার ৩২টি গ্রামের ৬০ থেকে ৭৫ বছর বয়সের প্রস্রাব ঝরে পড়ে এমন ৫৭৯ জন নারীকে নিয়ে করা হয়। প্রথম তিন মাস ফিজিওথেরাপিস্ট’র মাধ্যমে তাদের গ্রামের মধ্যে একটি স্থান নির্ধারণ করে ফিজিওথেরাপি করানো হয়। পরবর্তী তিন মাস তারা নিজেরা ফিজিওথেরাপি করেন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র পরিচালক এ কে এম রেজাউল হক বলেন, বর্তমানে যদি ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা দেয়া যায় তাহলে এর কর্মপরিধি বিস্তৃত করা সম্ভব হবে এবং বেশিসংখ্যক দরিদ্র বয়স্ক নারীর সেবা দেয়া সম্ভব হবে।
এরপর গবেষণা ফলাফলের উপর আলোচনা করেন গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী, অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক সায়েবা আক্তার, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. কাওছার আফসানা, গণবিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) ডা. লায়লা পারভীন বানু।
প্রধান অতিথি পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশান রিসার্স সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী সভাপতি ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, নারীদের প্রস্রাব ঝরে পড়া সমস্যা বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে একটি বড় সমস্যা এবং এ সমস্যা সম্পর্কে অবশ্যই তাদের জানাতে হবে। ব্যায়ামের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করার বিষয়টি সম্পর্কেও জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এ গবেষণার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ হয়েছে, যে কোনো সমস্যার সমাধানে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কাজের মাধ্যমে ফিজিওথেরাপিস্ট ও প্যারামেডিকসদের সেবাদানের নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো।
জেডএ/এমএস