জেনে নিন কণ্ঠস্বর সম্পর্কে অজানা তথ্য

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৩৩ এএম, ১৭ অক্টোবর ২০১৮

পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই একেবারে স্বতন্ত্র আর আলাদা কণ্ঠস্বর নিয়ে জন্মায়। জন্ম থেকেই মানব শরীরে পাওয়া বিস্ময়কর এই যন্ত্রটি নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করেছে বিবিসির বিজ্ঞানভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘দ্য কিউরিয়াস কেসেস অব রুথারফোর্ড অ্যান্ড ফ্রাই’। এ গবেষণায় কণ্ঠস্বর সম্পর্কে মজার তথ্য উঠে এসেছে।

১. গর্ভে থাকতেই নিজস্ব স্বরভঙ্গী

জন্মের আগেই, মায়ের গর্ভে থাকার সময়ই শিশু শিখে যায় তার বাবা-মায়ের কথা বলার নিজস্ব স্বরভঙ্গি বা একসেন্ট। বিবিসি জানাচ্ছে, একেক ভাষার একেক রকম যে কথার টান আছে, সেটির প্রকাশ ঘটে নবজাতকের কান্নার মধ্যেও। গবেষকরা একদল ফরাসী ও জার্মান নবজাতককে গবেষণা করে দেখেছে যে, এই শিশুদের কান্নার ধরনের মাঝেও রয়েছে তাদের ভাষার নিজস্ব টান। গবেষকরা এমনকি এটিও দাবি করেছেন যে, নবজাতকের কান্নার ধরণ দেখেই বলে দেয়া যাবে শিশুটি পৃথিবীর কোন অঞ্চলের।

২. স্বরবক্সের ধ্বনিটি যেমন করে বাজে

বুকের খাঁচা থেকেই স্বরধ্বনির শুরু। তারপর গলা, ঠোঁট, চোয়াল, জিহ্বাসহ আরও কিছু প্রয়োজনীয় প্রত্যঙ্গের সহায়তা নিয়ে মানুষ কথা বলে। এভাবে অনেক ধাপ পেরিয়ে আপনার স্বর স্বতন্ত্র হয়ে বেজে ওঠে।

৩. কেন স্বর গভীরতর হয়

পুরুষের কণ্ঠস্বর তার কৈশোরে ভেঙে পুরুষালী হয়ে ওঠে। আর পুরুষের গলায় যে বাইরের দিকে বেরোনো চোখা মতন একটি অংশ আছে সেটিকে ডাকা হয় ‘এডাম্স এপল’। মুখ থেকে গলার অভ্যন্তরে থাকা স্বরবক্সের যেই দূরত্ব সেটি সাধারণত একটু দীর্ঘ হয় আর এই অংশটুকুকে ডাকা হয় ভোকাল ট্র্যাক্ট বা কণ্ঠনালী। কণ্ঠনালী যত লম্বা হয় ধ্বনি তত নিচু হয়। তাই পুরুষের স্বর হয় গভীর। আর নারীদের মেনোপজের সময় তাদের স্বরে বদল আসে। তখনই তাদের স্বরের তীক্ষ্ণতাও কমে আসে।

৪. মানুষ যাকে পছন্দ করে তার বলার ভঙ্গি অনুকরণ করে

আপনি যদি কাউকে খুব পছন্দ করেন বা যদি কারও প্রতি আপনার পছন্দের মাত্রা বাড়তে থাকে, তাহলে নিজে থেকেই তার কথার ধরণ অনুকরণ করেন। যেমন: কোনো পুরুষ যদি কোনো নারীকে খুব ভালোবাসে তবে সেই নারীর সঙ্গে কথা বলার সময় কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে উঁচুপিচে কথা বলার চেষ্টা করে।

৫. বয়স হলে স্বর দুর্বল হয়ে আসে

যত বয়স হতে থাকে ততই ভোকাল কর্ড বা স্বরতন্ত্র দুর্বল হতে থাকে। ফলে, বাতাসের ওপরে নিয়ন্ত্রণ কমে আসতে থাকে। এজন্যই বয়স্করা দীর্ঘ বাক্য বলতে গিয়ে দম ফুরিয়ে আসে। আর এ বয়সে মাসলগুলো দুর্বল হয় বলে স্বরের তীক্ষ্ণতা বেড়ে যায়।

৬. শরীরের তুলনায় স্বরের বয়স বাড়ে ধীরে

মানুষের কণ্ঠস্বর শুনে তার বয়স অনুমান করার চেষ্টা করেছেন কখনও? বিবিসি বলছে, গবেষণায় তারা দেখেছে যে, মানুষের শরীর যত দ্রুত বুড়ো হয় স্বর তত দ্রুত বুড়িয়ে যায় না। তাই, মানুষের বয়সের তুলনায় তার স্বর সাধারণত কম বয়সী শোনায়।

৭. নিজের কণ্ঠস্বরকে সাবলীল রাখতে করণীয়

নিজের স্বরকে সাবলীল আর সুন্দর রাখতে আপনি কিছু সাধারণ ব্যায়াম করতে পারেন। যেমন: যে কোনো একটি শব্দ, ধরা যাক বাংলায়, ‘আহামরি’ শব্দটি আপনি নিলেন। এই শব্দটিকে টেনে টেনে লম্বা করে জোরে জোরে উচ্চারণ করুন। যেমন: আ-আআআআআআ-হা-আআআআআ-ম-অঅঅঅ-রি-ইইইইই। এভাবে একেবারে দম ফুরিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত সশব্দে উচ্চারণ করুন। এ রকম কয়েকবার করুন।

এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।