বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিএসএমএমইউতে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালিত
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মনোরোগবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে র্যালি, সেমিনার, নাটক প্রদর্শনী, কুইজ প্রতিযোগিতা, ক্রেস্ট প্রদানসহ বর্ণাঢ্য নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আজ (বুধবার) বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস-২০১৮ পালিত হয়েছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় ‘পরিবর্তনশীল বিশ্বে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য’।
দিবসটি উপলক্ষে বিএসএমএমইউ’র শহীদ ডা. মিলন হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার।
মনোরোগবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম এম এ সালাউদ্দীন কাউসার বিপ্লবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন একই বিভাগের অধ্যাপক ডা. ঝুনু শামসুন নাহার, অধ্যাপক এম এস আই মল্লিক।
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, বিশ্ব এখন তরুণদের। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তরুণদের অবদান অনস্বীকার্য। তবে পরিবর্তনশীল বিশ্বে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অবশ্যই ভাবতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে নিয়মিত ঘুম, ব্যায়াম, মানসিক চাপ মোকাবেলার সক্ষমতা অর্জন ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ জরুরি। এরমধ্যে শারীরিক ব্যায়াম খুবই প্রয়োজন। তরুণ প্রজন্মকে এ বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খেলাধূলা, বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে বসে গল্প করা ও গান শোনা দরকার। তরুণ প্রজন্ম এখন আর তার পাশের লোকটির সঙ্গে কথা না বলে মোবাইলে সময় ব্যয় করে, এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া জরুরি।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার বলেন, পরিবর্তনশীল বিশ্বে কিশোর-কিশোরী, তরুণ, বয়স্ক সবাই কমবেশি প্রভাবিত হচ্ছে। এরমধ্যে তরুণরা সবচাইতে বেশি প্রভাবিত হচ্ছে। যেকোনো পরিবর্তনই হতে হবে মানুষের কল্যাণে। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে সুকুমার বৃত্তির বিকাশ ও প্রকৃত কল্যাণ হবে না।
অধ্যাপক ডা. এম এম এ সালাউদ্দীন কাউসার বিপ্লব বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে বিএসএমএমইউর মনোরোগবিদ্যা বিভাগ থেকে বিশ্বের সর্বশেষ প্রযুক্তির প্রয়োগ, সর্বাধুনিক চিকিৎসাসেবা প্রদান এবং গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
অধ্যাপক ডা. ঝুনু শামসুন নাহার বলেন, প্রযুক্তির কল্যাণে এখন তরুণরা অনেক কিছুই জানে। প্রযুক্তির ভালো বিষয়গুলো নিতে হবে এবং খারাপ বিষয়গুলো বর্জন করতে হবে।
অধ্যাপক এম এস আই মল্লিক বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সেবা প্রাপ্তির বিষয়গুলো জানাতে হবে। সিজোফ্রেনিয়া রোগী কখনও ভালো হয় না, এটা ঠিক না। এই ভ্রান্ত ধারণা ভাঙতে হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, বিশ্বব্যাপী অসুস্থতা ও ডিজঅ্যাবিলিটির অন্যতম প্রধান কারণ বিষণ্ণতা। ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের অসুস্থতার শতকরা ১৬ ভাগ মানসিক কারণ। ১৫-১৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ আত্মহত্যা। মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানসিক রোগের প্রতিকার হোক বর্তমান প্রজন্মের অঙ্গীকার।
এমএমইউ/এমএমজেড/আরআইপি