পুলিশের মতো জেরা করেন কেন?
পুলিশের মতো জেরা করেন কেন? কথা বলব না বলেই খট করে মোবাইল ফোন কেটে দিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের উপ-পরিচালক বিদ্যুৎ কান্তি পাল। অথচ খানিক আগেই বেশ আন্তরিকভাবে হাসপাতালের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলছিলেন, ‘বোঝেন তো, যে সকল অধ্যাপক তদন্ত করছেন তারা তো এই একটা কাজ নিয়ে থাকেন না। হাজারটা কাজে ব্যস্ত থাকেন।’
তিনি বলেন, চিকিৎসকরা ইতোমধ্যে তদন্ত শেষ করেছেন কিন্তু ব্যস্ততায় সবাই এক সঙ্গে বসে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা না করায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া যাচ্ছে না। আগামীকাল বা পরশু হয়তো বসে প্রতিবেদন জমা দেবেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম তো তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কিন্তু অধ্যাপকদের কারণে তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেয়ার বিষয়টি দুঃখজনক নয় কি? এ কথা বলতেই তিনি বিরক্ত হয়ে মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন।
সম্প্রতি ঢামেকে মৃত ঘোষিত নবজাতকের কবরস্থানে গোসলের সময় নড়েচড়ে উঠার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন সম্পন্ন হয়েছে কি-না তা জানতে এ প্রতিবেদক আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসিরউদ্দিনের সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকে যান। পরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী জানান, স্যার, ব্যস্ত রয়েছেন। ভিজিটিং কার্ড দিয়ে এ প্রতিবেদক বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেও তার দেখা না পেয়ে নবজাতক মৃত ঘোষণার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান উপ-পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ঢামেকে জীবিত নবজাতককে মৃত ঘোষণার ঘটনায় গঠিত তদন্ত প্রতিবেদন এখনও সম্পন্ন হয়নি। গত ২৩ এপ্রিল বহুল আলোচিত এ ঘটনাটি ঘটে। আজিমপুর কবরস্থানে দাফনের সময় নড়ে উঠে নবজাতক। ওইদিন নবজাতককে প্রথমে আজিমপুর মেটারনিটি ও পরে ঢাকা শিশু হাসপাতালের ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সেই নবজাতক। ঘটনাটি সে সময় ব্যাপক আলোচিত হয়। এ ঘটনায় হাসপাতালের উপ-পরিচালক বিদ্যুত কান্তি পালকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটিতে নবজাতক ও গাইনি বিশেষজ্ঞদের রাখা হয়।
গত ২৫ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক গোল টেবিল আলোচনায় প্রসঙ্গটি উত্থাপন করা হলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ঢাকা মেডিকেলে জীবিত নবজাতককে মৃত ঘোষণা এবং পরে ওই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে। তার ঘোষণার ১২ দিন পেরিয়ে গেছে। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি।
মৃত ওই নবজাতকের মামা শরীফুল জানান, সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে তার বোনকে রিলিজ করার সময় হাসপাতাল পরিচালক বলেছিলেন, প্রয়োজনে যোগাযোগ করা হবে। কিন্তু কেউ আর যোগাযোগ করেনি।
এমইউ/ওআর/আরআইপি