বেসরকারি মেডিকেল কলেজ নীতিমালা সংশোধনের দাবি
বেসরকারি মেডিকেল কলেজ নীতিমালায় সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন মালিকরা। তারা বলছেন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ নীতিমালায় বেশকিছু গরমিল রয়েছে।
এই নীতিমালায় এমন কিছু ধারা উল্লেখ করা হয়েছে যা যথাযথ মেনে মেডিকেল কলেজ পরিচালনা করা খুবই কঠিন। অনেক সরকারি মেডিকেল কলেজও এসব ধারা মেনে চলে না। দেশের ৬৭ শতাংশ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করছে বেরসকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলো। অথচ নানারকম সমস্যার কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এ খাতের পথচলা।
বুধবার ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) স্বাস্থ্যবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে তারা এই দাবি জানিয়েছেন। রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে কমিটির চেয়ারম্যান ডা. এবিএম হারুনের সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআই স্বাস্থ্যবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ প্রীতি চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডেল্টা মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. সৈয়দ মুকাররম আলী, এনাম মেডিকেল কলেজের পরিচালক রওশন আক্তার চৌধুরী, প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা. এ এন এম নওশাদ খান, ইস্টওয়েস্ট মেডিকেল কলেজের পরিচালক ইকরাম হোসেন বিজু, রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান নিলু আহসান, প্রত্যয় মেডিকেল ক্লিনিকের চেয়ারম্যান নাজমুল হক, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান ডা. মো. আবু সাঈদ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, প্রাইভেট নীতিমালায় বলা হয়েছে, ৫০ জন ছাত্র সম্বলিত মেডিকেল কলেজের জন্য এক লাখ স্কয়ার ফিট জায়গার থাকতে হবে। কিন্তু ছাত্র সংখ্যা দ্বিগুণ বা ১০০ জন হলে জায়গাও দ্বিগুণ অর্থাৎ দুই লাখ স্কয়ার ফিট করতে বলা হয়েছে। এটা মেনে চলা কঠিন। নীতিমালায় এ ধরনের অনেক গরমিল রয়েছে। তাই এগুলো সংশোধন করতে হবে। তাছাড়া হাসাপাতেলর চিকিৎসক, নার্সসহ সকল স্টাফের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে কথায় কথায় চিকিৎসকদের গায়ে হাত তোলা না হয়।
বক্তারা বলেন, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার মানও বাড়াতে হবে। প্রতিবছর দুই বিলিয়ন ডলার দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে চিকিৎসাবাবদ। অর্থাৎ প্রতি বছর অসংখ্য রোগী দেশের বাইরে যাচ্ছে চিকিৎসা নিতে। এসব রোগীর আস্থা ফেরাতে হলে চিকিৎসা ব্যবস্থার মান বাড়াতে হবে। বিশেষ করে শহর থেকে একেবারে গ্রাম পর্যায়ে মানসম্পন্ন চিকিৎসা চিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য বাংলাদেশ অ্যাক্রিডেটেশন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে গ্রাম পর্যায়ে অ্যাক্রিডেটেড ল্যাব বসাতে হবে।
সভায় আলোচকরা খসড়া ‘চিকিৎসা সেবা আইন’ এবং ‘বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা’ আইন দুটিকে যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত করে আইন হিসেবে পাস করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্যান্য খাতের মতো ‘বিশেষ আর্থিক খাত’ গঠনের ওপর জোর দেন। তারা দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার মান উন্নয়নে ‘অ্যাক্রিডিটেড ল্যাবরেটরি’ সেবা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেন। তারা দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে দেশের সকল নাগরিকের ‘কেন্দ্রীয় ডাটা সিস্টেম’ প্রতিষ্ঠারও প্রস্তাব করেন। আলোচকরা নিম্নবিত্ত পরিবারের মেধাবী মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সহায়তায় ‘বিশেষ শিক্ষা ঋণ’ প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানান। তাছাড়া দেশের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে দ্রুত সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা চালুর দাবি জানান তারা।
এমএ/জেডএ/জেআইএম