শরীর থেকে চামড়া খসে পড়ছে মাহাদির

মাহাবুর আলম সোহাগ
মাহাবুর আলম সোহাগ মাহাবুর আলম সোহাগ , সহকারী বার্তা সম্পাদক (কান্ট্রি ইনচার্জ)
প্রকাশিত: ১১:২৪ এএম, ১৪ জুলাই ২০১৭

দুই বছর আগে ডায়রিয়া হয়েছিল ৪ বছরের শিশু আব্দুল্লাহ আল মাহাদির। প্রথম দিনই ১শ বারেরও অধিক পাতলা পায়খানা হয়েছিল তার। এরপর থেকেই শরীর ফুলে যাওয়া ও চামড়া খসে মাংস বের হয়ে যায় মাহাদির। যখন একটু ভালো হয়, তখন নতুন করে চামড়া জন্মাতে শুরু করে। আবার যখন ডায়রিয়া শুরু হয় তখন সেই আগের অবস্থা শুরু হয় তার। মাহাদির চিকিৎসা করাতে এ পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ করেছেন বাবা মসজিদের ইমাম আলাউদ্দিন। 

মাহাদি বর্তমানে শ্যামলীতে অবস্থিত শিশু হাসপাতালের ৩য় তলার ৩০২ নম্বরে কেবিনে চিকিৎসাধীন। গত ১০ রমজান অর্থাৎ ৬ জুন থেকে মাহাদিকে নিয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তার বাবা-মা। প্রতিদিন সেখানে আড়াই হাজার টাকা কেবিন ভাড়া, ইনজেকনসহ অন্যান্য ওষুধ কিনতে সব মিলে ৫ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে মাহাদির জন্য।

একই হাসপাতালে কিছুদিন ফ্রি বেডে থাকার সুযোগ হলেও মাহাদির প্রতিনিয়ত যন্ত্রণার কান্না ও আহাজারি থেকে অন্য রোগীদের মুক্তি দিতে তাকে নিয়ে কেবিনে উঠেছেন বাবা আলাউদ্দিন। মাহাদির বাড়ি কুমিল্লার লালমাই উপজেলার নারগুরী পাড়া। তার বাবা আলাউদ্দিন ওই গ্রামের একটি মসজিদের ইমাম।

কেবিনে উঠেই প্রতিদিন আড়াই হাজার টাকা ভাড়া দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে আলাউদ্দিনকে। তবে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট তিনি।

মাহাদির বাবা আলাউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডাক্তারদের আন্তরিকতার অভাব নেই। বলা যেতে পারে প্রতিদিন ডাক্তার সালাউদ্দিন মাহমুদসহ আরও সিনিয়র ডাক্তাররা মাহাদির খোঁজখবর নিচ্ছেন।

তিনি বলেন, অতিরিক্ত পাতলা পায়খানা হওয়ার কারণে মাহাদির শরীর থেকে জিঙ্ক ও প্রোটিন বের হয়ে গেছে। এ কারণেই সমস্যাটা বেশি হচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন ডাক্তাররা।

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে এলাকার একজন ফেসবুকে মাহাদির ছবি প্রকাশ করে সাহায্য চেয়েছিল। সেখান থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকা সহযোগিতা পেয়েছি। সেই টাকা থেকে ইতোমধ্যে প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। হাতে আছে এক লাখ টাকা। এই হাসপাতালের ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়েছেন মাহাদিকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সেখানে গেলে প্রায় ৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। আমার কাছে তো এত টাকা নেই। জানি না কপালে কি আছে আমার। 

Mahadi

আলাউদ্দিন বললেন, শুনেছি মুক্তা নামে এক কিশোরীর চিকিৎসার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী নিয়েছেন। মাঝে মধ্যে পত্রিকায় দেখি তিনি অনেকের চিকিৎসা সরকারিভাবে করান। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ আমার একমাত্র ছেলের চিকিৎসা যদি তিনি দেশের বড় কোনো হাসপাতালে করেন হয়তো সুস্থ হয়ে যাবে।

মাহাদির মা জানান, আলো দেখলেই সম্ভবত জ্বালাপোড়া করে মাহাদির শরীর। তাই আলো দেখলেই চিৎকার করছে মাহাদি। গত দুই বছর ধরে ঘুমাতে পারিনি তার জন্য। একমাত্র ছেলের এই যন্ত্রণা আর সহ্য হয় না। 

মাহাদিকে কেউ সাহায্য পাঠাতে চাইলে সরাসরি শিশু হাসপাতালের ৩য় তলার ৩০২ নম্বর কেবিনে গিয়ে দিতে পারেন। অথবা মাহাদির বাবার ০১৭৮৪৯৩৪১০৫ ও ০১৬২৬০৫৫১২৩ নম্বরে বিকাশের মাধ্যমে দিতে পারেন। নম্বর দুটি মাহাদির বাবা আলাউদ্দিনের।

এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।