জাতীয় অর্থোপেডিক হবে এশিয়ার বৃহত্তম অর্থোপেডিক হাসপাতাল
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, অতিরিক্ত ৫০০ শয্যা যোগ করে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালের ১৪ তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন সম্প্রসারণের কাজ আগামী বছরের প্রথমার্ধে শেষ হবে। এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতাল হবে এশিয়ার বৃহত্তম অর্থোপেডিক হাসপাতাল।
মঙ্গলবার রাজধানীতে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।
সরকারি হাসপাতালের সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে উত্থাপিত অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সারাদেশের হাসপাতালের জন্য এখন প্রধান সমস্যা হলো তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির জনবল সংকট। বর্তমানে সারাদেশের সরকারি হাসপাতালে ৪০ হাজার কর্মচারীর পদ শুন্য। শূন্যপদ পুরণে এক বছর আগে নেওয়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ আন্তঃমন্ত্রণালয় জটিলতার কারণে এখনো বাস্তবায়নের মুখ দেখছে না।
তিনি জানান, সীমিত সম্পদ নিয়েও সরকার স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। গত কয়েক বছরে অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি প্রায় আট হাজার চিকিৎসক ও ১০ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যসেবার চিত্রের ইতিবাচক উন্নয়ন ঘটানো হলেও ৪০ হাজার কর্মচারীর শূন্যতার কারণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ, দালালচক্রের উৎপাতসহ বিভিন্ন অভিযোগ এখনো পিছু ছাড়ছে না।
যত দ্রুত সম্ভব কর্মচারীদের শূন্য পদ পূরণ করা হবে, সরকারি হাসপাতাল থেকে তত দ্রুত সব ধরনের অভিযোগ নিশ্চিহ্ন করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
স্বাধীনতার পর পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগ্রহে পঙ্গু হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছিল জানিয়ে নাসিম বলেন, দীর্ঘ কয়েক দশকে জনসংখ্যা ও দুর্ঘটনার হার বৃদ্ধি পাওয়ায় এই হাসপাতালে রোগীর চাপ শয্যা সংখ্যার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি থাকে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে অর্থোপেডিক হাসপাতালের নতুন ১৪ তলা ভবনের কাজ হাতে নেওয়া হয়, আগামী বছর যা শেষ হবে।
পরে মন্ত্রী হাসপাতালের জরুরি বিভাগসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন এবং রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন, হাসপাতালের সেবার মান সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
পরে তিনি হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে বৈঠক করে সেবার মান বাড়াতে আরও নিবেদিত হওয়ার আহ্বান জানান।
এ সময় হাসপাতালের নার্স সংকটের কথা মন্ত্রীর নজরে আনলে তিনি তা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। সেবার মান বাড়াতে কর্মস্থলে থাকা, যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণে সতর্ক থাকাসহ সেবাদানে কোনো শৈথিল্য যেন না ঘটে সেক্ষেত্রে সজাগ থাকতে তিনি সবাইকে নির্দেশ দেন।
এ সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান, প্রকল্প পরিচালক ডা. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা এবং ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মোনায়েম হোসেনসহ মন্ত্রণালয় ও হাসপাতালের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এমইউ/এসআর/পিআর