বিনামূল্যে হার্ট অ্যাটাকের ইনজেকশন!

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৩৬ পিএম, ১৯ মে ২০১৭

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে জীবনরক্ষাকারী ‘স্ট্রেপটোকাইনেজ’ ইনজেকশন সরবরাহ করা হচ্ছে।

হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, হার্ট অ্যাটাকের পর ধমনীতে জমাট রক্ত গলিয়ে দিতে বিশেষ এ ইনজেকশন দিতে হয়। হার্ট অ্যাটাকের কারণে রক্ত জমাটবদ্ধ হয়ে যায়। জবাটবদ্ধ রক্ত তরল করে স্বাভাবিক চলাচলের উপযোগী করতে এবং হার্ট সচল রাখতে এটি বেশ কার্যকর।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীকে দ্রুততম সময়ে এটি প্রদানের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দুই হাজারেরও বেশি ইনজেকশন ক্রয় করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ইনজেকশনের প্রতিটির দাম প্রায় ছয় হাজার টাকা।

হাসপাতাল পরিচালক অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমান জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে জানান, হৃদরোগ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে দেড়শ থেকে দুইশ রোগী ভর্তি হন। তাদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭০ থেকে ৮০ জন। এসব রোগীর মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জন মারাত্মক (একিউট হার্ট অ্যাটাক) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন।

এখন থেকে হাসপাতালে একিউট হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত প্রতিটি রোগীকে সরকারিভাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে জীবনরক্ষাকারী এ ইনজেকশন দেয়া হবে। হাসপাতালটিতে প্রতি বছর ছয় হাজার স্ট্রেপটোকাইনেজের চাহিদা রয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, কঠোর মনিটরিং ও সুপারভিশনের মাধ্যমে প্রতিটি রোগীর বিনামূল্যে ইনজেকশন প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। কর্তব্যরত নার্সরা যেমন রেজিস্ট্রারে ইনজেকশনের হিসাব লিপিবদ্ধ করবেন, একই সঙ্গে রোগী বা তার স্বজনদের হাতেও একটি বিনামূল্যে ইনজেকশন সরবরাহের কপি সরবরাহ করবেন।

কী কারণে একিউট হার্ট অ্যাটাক হয়, কখন চিকিৎসা শুরু করতে হয় এবং কী ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে- এ সম্পর্কে জানতে চাইলে অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমান জানান, হার্টের রক্তনালীতে ব্লক ও ব্লকে রক্ত জমাট বাঁধায় একিউট হার্ট অ্যাটাক হয়। ছয় থেকে বার ঘণ্টার মধ্যে রোগী হাসপাতালে আসলে প্রাইমারি পিসিআই ও স্ট্রেপটোকাইনেজ ইনজেকশন পুশ করা হয়। এ দুই পদ্ধতিতে রোগীর চিকিৎসা প্রদান হয়ে থাকে।

প্রাইমারি পিসিআই পদ্ধতিতে রোগীকে ক্যাথল্যাবে নিয়ে এনজিওগ্রাম করে রক্তনালীর ব্লক অপসারণ করে সেখানে হার্টের রিং বসানো হয়। প্রাইমারি পিসিআই করার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সহায়ক টিমের উপস্থিতি নিশ্চিতের পাশাপাশি রোগীর আর্থিক সক্ষমতার বিষয়টি জড়িত।

এছাড়া রোগী হাসপাতালে পৌঁছানোর আধাঘণ্টার মধ্যে ক্লট ডিসলবিং ওষুধ (স্ট্রেপটোকাইনেজ ইনজেকশন) দিয়ে প্রাণ রক্ষা করা হয়। এজন্য দ্রুততম সময়ে সমন্বিত ইসিজি ও ডাক্তার রোগ চিহ্নিত করবে। রাত-বিরাতে রোগী আসলে কিংবা আর্থিক সঙ্গতি না থাকলে রোগীর স্বজনরা টাকা জোগাড় করতে বিলম্ব করেন। দ্রুততম সময়ে ইনজেকশন পুশ করতে না পারায় রোগীর হার্টের ক্ষতি ও পাম্পিং ক্ষমতা হ্রাস পায়; এতে মৃত্যুহার বেড়ে যায়। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, পরিচালক হিসেবে অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমানের যোগদানের পর ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে ইনজেকশনটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এখন থেকে পর্যাপ্ত ওষুধ নার্সদের কাছে সংরক্ষিত থাকবে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

এমইউ/এমএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।