৯ দিনের ছুটিতেও আউটডোর-জরুরি বিভাগ খোলা রাখার ভাবনা


প্রকাশিত: ০৮:৪২ এএম, ২৪ জুন ২০১৬

সরকারি ছুটি ৯ দিন হলেও ঈদের দিন ছাড়া ছুটির বাকি দিনগুলোতে হাসপাতালের আউটডোর ও জরুরি বিভাগ খোলা রাখার নির্দেশ আসছে। আগামী রোববার বা সোমবার এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

শুক্রবার সকালে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে এমনই ঈঙ্গিত দিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব জাকিয়া সুলতানা।

তিনি বলেন, সরকারি ছুটি ৯ দিন হলেও সরকারি হাসপাতালে ৯ দিন ছুটি কাটানোর সুযোগ  কোনোভাবেই নেই। আগের বছরগুলোতে ছুটি কম থাকলেও সীমিত পরিসরে আউটডোর ও জরুরি বিভাগ সার্বক্ষণিক খোলা ছিল। এবার ৯ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষিত হলেও এর ব্যতিক্রম হবে না।

ঈদের দিন ছাড়া ছুটির অন্যান্য দিনগুলোতে আউটডোর ও জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রাখার চিন্তাভাবনা চলছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
 
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, এ বিষয়টি  স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক দেখে থাকেন। ৯ দিনের ছুটিতে হাসপাতাল কীভাবে চলবে সে সম্পর্কে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সুস্পষ্ট নির্দেশনা ইতোমধ্যে চেয়েছেন তারা। কয়েকদিন আগে থেকে নির্দেশনা না পেলে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা দুরুহু হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাহী আদেশে সরকারিভাবে ৯ দিনের ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হলেও স্বাস্থ্য বিভাগের ক্ষেত্রে বিশেষ করে হাসপাতালের অধিকাংশ চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ডসহ সহযোগী অন্যান্য স্টাফদের ভাগ্যে যে ছুটি জুটবে না তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই হতাশা ব্যক্ত করেছেন।   

ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন সরকারি চিকিৎসক ডা. শুভ প্রসাদ তার ফেসবুকে একটি ‘স্বপ্নে পাওয়া ভ্রমন কাহিনী’ লিখেছেন।

সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘সমুদ্রের গর্জনে ঘুম ভাঙল। কক্সবাজারের এই রিসোর্টটা সমুদ্রের এত কাছে, মনে হয় ঘুমিয়ে আছি কোনো জাহাজে। হোটেলের ব্যালকনি থেকেই পুরো সমুদ্র দেখা যায়। সাথে অসংখ্য মানুষের পদচারণা। পাশে কন্যা আর কন্যার মা ঘুমুচ্ছে। রাতে বারবিকিউ পার্টি হয়েছে। এখনো ঘুমে তাই। সকালের নাস্তাটা করে সমুদ্রস্নানে বেরুবো। আজ হিমছড়িটাও ঘুরে আসা যায়। কাল সকালে সেন্টমার্টিন। সেন্টমার্টিনে প্রথমবার যখন যাই, তখন আমি সন্ধানীর বড় পদে। এমনি কনজাংটিভাইটিস এ চোখ ফুলে ঢোল, চুলকাচ্ছে সমানে। সাথে সাথে মিসম্যানেজমেন্টের জন্য খাইরুল ভাইয়ের ঝাড়ি। এত ঝাড়ি খেয়ে কিছুটা মন খারাপ হলেও এই লোকটাকে কিছু বলতে পারিনি। ইনি আমার আইডল টাইপ। সবাই আনন্দ করছে আর আমি একটা কালো চশমা পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। তাও রেগুলার চশমার উপরে। হা হা।

যাক আমাদের তিনজনের একসাথে এটা দ্বিতীয় সমুদ্র দর্শন। প্রথমবারে ভয়ে ছিলাম। ৭ মাসের পিচ্চি একটা মেয়ে আর একে নিয়ে আমরা পাগল বাবা মা সমুদ্র ঘুরতে চলে এসেছি। ভয়ে ছিলাম ঠান্ডা না লাগে।

এখন ও কিছুটা বড়, সমুদ্রের ঢেউ দেখলেই হি হি করে হেসে ওঠে। মেয়ের মা আর আমি মিলে এটা কি, ওটা কি জবাব দিতে দিতে অস্থির। এ যেন এক্সামিনারের ভূমিকায় আর আমরা স্বতঃস্ফূর্ত ছাত্র-ছাত্রী।

এবারের ঈদের ছুটিটা বেশ গেল। টানা ৯ দিনের বন্ধ। সুযোগ পেয়ে বেরিয়ে নিলাম কক্সবাজার। অখন্ড অবসর।

সম্পূর্ন স্বপ্নে পাওয়া উপরের সংক্ষিপ্ত ভ্রমণ কাহিনী। ঈদের ৯ দিন ছুটি যদি আমরা কখনো পেতাম কি করতাম সেটা ভেবে। কিন্তু হায়, এ যে হওয়ার নয়। জাতিসেবার গুরুদায়িত্ব আমার কাঁধে। ঈদে ছুটি ইহজীবনে আমার প্রাপ্য নয়। তাই ঢাকা ফাঁকা করে গ্রামে আসা বিপুল জনগণের চাপ প্রায় একাই সামলানোর ওয়ার্ম আপে মনকে ব্যস্ত রাখছি।

সবাই আমার জন্য দোয়া রাখবেন। আপনাদের জন্যও দোয়া রইলো, সবাই সুস্থ থাকুন, পরিবার পরিজন নিয়ে সুস্থতার সঙ্গে ঈদ কাটান। যাতে হাসপাতালমুখো না হতে হয়। যদি হতেও হয় ভয় নেই, আমরা আছি। সবসময় আপনাদের সেবায় নিয়োজিত। দেশের প্রতিটি প্রান্তে, প্রতিটা হাসপাতালে।’

শুধু শুভ প্রসাদই নন, ঈদের ছুটিতে তার মতো হাজারো চিকিৎসক-নার্স ছুটি না কাটিয়ে হাসপাতালে রোগীকে পরম মমতায় চিকিৎসা সেবা দেন।

এমইউ/এনএফ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।