রতন টাটার ব্যবসায় সফলতার ৪ কৌশল

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪৬ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২৪

ভারতের বিশ্ববিখ্যাত শিল্পপতিদের একজন রতন টাটা। ব্যবসার মাধ্যমে ভারতকে বহির্বিশ্বে ব্র্যান্ডিং করা সফল এই ব্যবসায়ী। ভারতের অন্যতম এই বিজনেস টাইকুন টাটা গ্রুপকে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

লবণ থেকে সফটওয়্যার, কী নেই টাটা গ্রুপে? ভারতের প্রায় প্রতিটি পরিবারেই টাটা গ্রুপের তৈরি পণ্য ব্যবহার করা হয়। একটি কথা প্রচলিত আছে যে, টাটা গ্রুপ ‘সুচ থেকে শুরু করে জাহাজ পর্যন্ত’ সবকিছুই তৈরি করে।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দিয়েছেন রতন টাটা। শতাধিক কোম্পানি এবং ৬ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি কর্মী নিয়ে কাজ করছে ভারতের অন্যতম শীর্ষ এই গ্রুপটি। টাটা গ্রুপের বার্ষিক রাজস্ব আয় ১০ হাজার কোটি ডলারের বেশি। ২০২২ সালের এক রিপোর্ট অনুসারে, টাটা গ্রুপের মোট সম্পদ প্রায় তিন হাজার ৮শ কোটি রুপি বলে অনুমান করা হয়।

বাবা-দাদার তৈরি ব্যবসা হলেও কীভাবে তিনি শক্ত হাতে এতো বড় সংস্থা পরিচালনা করেছেন তাও এক বিস্ময়। রতন টাটা ছিলেন খুবই সাদামাটা স্বভাবের একজন মানুষ। টাটা সংস্থার এতো বিশাল সম্পত্তি থাকার পরও রতন টাটার নিজের ছিল খুবই সামান্য।

রতন টাটা তার আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দাতব্য কাজে দান করতেন। সে কারণে টাটা গ্রুপের ব্যবসার আকারের তুলনায় তুলনামূলকভাবে তার সম্পদের পরিমাণ কম ছিল। টাটা ট্রাস্টের মাধ্যমে তিনি স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং গ্রামীণ উন্নয়নে উদারভাবে অবদান রেখেছেন। বর্তমানে পৃথিবীর ধনীতম ব্যক্তি ইলন মাস্কও একসময় তাঁকে নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে জ্ঞানী বলে অভিহিত করেছিলেন।

অনেকেই রতন টাটার সফলতা দেখে নিজেও স্টার্ট-আপে নিজেদের জায়গা তৈরি করতে চান। রতন টাটার সফলতার পেছনে ছিল মাত্র ৩টি কৌশল। যে ব্যাপারগুলোতে তিনি একেবারেই ছাড় দিতেন না। যে কারণেই তার আজকের এই সফলতা বলেই মনে করতেন তিনি। বিভিন্ন সময় সাক্ষাৎকারে এই ব্যাপারে কথা বলেছেন তিনি। আসুন জেনে নেওয়া যাক কী ছিল সেই কৌশল-

নিজের কর্মচারীদের পাশে থাকুন

আপনি যত বড় বা সফল ব্যবসায়ী হোন না কেন, দিনের শেষে আপনার আপনার কর্মচারীদের পাশে থাকা প্রয়োজন। রতন টাটার বেশ পরিচিতি রয়েছে কর্মচারীদের পাশে থাকার জন্য। কর্মচারীরা তাকে চেনেন কর্মচারীবান্ধব হিসেবে। তার এই আচরণ তাকে সাফল্যের রাস্তায় নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।

কর্মী ছাঁটাই কোনো সমাধান নয়

বিভিন্ন কোম্পানিকে মাঝেমধ্যেই খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। টার্নওভার, লাভের পরিমাণ ইত্যাদি খারাপ হলে অনেক কোম্পানিই কর্মচারী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটতে শুরু করে। কিন্তু মনে রাখা দরকার কর্মচারী ছাঁটাই কোনো রাস্তা নয়। অত্যধিক কর্মী ছাঁটাই কোম্পানির বদনামের কারণ হতে পারে। টাটার ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটা একেবারেই নেই। এই অতিমারিতেও যেখানে একের পর এক সংস্থা ছাঁটাইয়ের পথে হেঁটেছে সেখানে ব্যতিক্রম একমাত্র টিসিএস।

আপনার ঐক্য আপনার শক্তি

কঠিন সময়ে ঐক্যবদ্ধ থাকাটা আপনাকে সবসময় বেনিফিট দিয়ে থাকে। ব্যবসার ক্ষেত্রে কঠিন সময় আসে। কিন্তু সেই কঠিন সময়ে যদি আপনি এবং আপনার কোম্পানির সঙ্গে জড়িত সব কর্মচারীরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারেন। তবে আপনার সাফল্য আটকাবে না।

প্রাসঙ্গিক এবং ওয়াকিবহাল থাকুন

যিনি নিজের কোম্পানি তৈরি করছেন, তার নিজের সবসময় প্রাসঙ্গিক এবং সব বিষয় নিয়ে ওয়াকিবহাল থাকা প্রয়োজন। নাহলে তার ব্যবসা দাঁড়াবে না। রতন টাটার সবচেয়ে বড় গুণ হলো তিনি তার পরিস্থিতি নিয়ে সবসময় ওয়াকিবহাল। এছাড়া দুনিয়ায় যখন যা ঘটছে, সেটা নিয়েও তিনি যথেষ্ট ওয়াকিবহাল থাকেন। তিনি অল্পবয়সীদের সঙ্গে কাজ করতে ভালোবাসেন। তরুণ কর্মচারী নেওয়ার জন্য তার কোম্পানি বিখ্যাত। সাফল্যের বিচারে সেই জন্যেই এতটা এগিয়ে তিনি।

কেএসকে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।