মে দিবস ও শিশু মামুনের গল্প


প্রকাশিত: ০১:৩২ পিএম, ০১ মে ২০১৬

১ মে, বিশ্বের কোটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও দাবি আদায়ের মহান দিবস। বঞ্চনা, নির্যাতন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে মেহনতি মানুষের সংগ্রাম আর অধিকার আদায়ের রক্তাক্ত গৌরবময় দিন।
শ্রমজীবী মানুষের এই স্বীকৃতির সূচনা সহজ ছিল না। দীর্ঘ বঞ্চনা আর শোষণ থেকে মুক্তি পেতে ১৮৮৬ সালের এই দিনে বুকের রক্তে শ্রমিকরা আদায় করেছিলেন দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের অধিকার। রক্ত দিয়ে কেনা দিনটিকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালন করা হয়।

মে দিবস সরকারি ছুটি। সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতের পাশাপাশি ব্যাংকসহ কলকারখানা বন্ধ থাকে এই দিনে।

কিন্তু বন্ধ নেই মামুনের জীবন যুদ্ধ। মে দিবসের সকালে চা বিক্রির জন্য ১১ বছর বয়সি এই মামুনকে বের হতে হয়েছে জীবন সংগ্রামে।

মামুনের সাথে আলাপকালে সে জানায়, তার বাড়ি বরগুনা জেলায়। বাবা মারা গেছে অনেক আগেই। মা গ্রামে থাকে, আর সে থাকে রাজধানীর মুগদাপাড়া সংলগ্ন মান্ডায় বোন-দুলাভাইয়ের সঙ্গে।

৩য় শ্রেণি পর্যন্ত পড়া-লেখা করার পর আর স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। সংসারের দায়িত্ব পড়েছে তার ছোট্ট কাঁধে। ঘুরে ঘুরে ফ্লাস্কে চা-বিস্কিট বিক্রি করেই চলে তাদের সংসার।

সারা দিনে কত টাকা বিক্রি করো জানতে চাইলে মামুন জানায়, ‘২০০ থেকে আড়াইশ’ টাকা বিক্রি হয়। মাস শেষে মাকে টাকা পাঠাই, আর কিছু টাকা আমি খরচ করি।’

বোন-দুলাভাই টাকা দেয় না? এমন প্রশ্নে সে জানায়, বোন-দুলাভাইয়ের বাড়িতে থাকতে দেয়, আর সেখান থেকে প্রতিদিন সকালে উঠেই চা বিক্রি করতে বের হয়ে যাই।

মে দিবস উপলক্ষে বেতার-টেলিভিশনে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র ও নিবন্ধ প্রকাশ করেছে।

শ্রমিক সংগঠনগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও নানা কর্মসূচি পালন করছে দিনটিতে। কিন্তু এই মামুনদের কাছে মে দিবস আর অন্য সব দিন একই রকমের জীবন সংগ্রামের।

এএস/এমএমজেড/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।