সুজন-শুভদের বৈশাখ মানে অন্য শিশুদের আনন্দ দেখা


প্রকাশিত: ০৯:৫৫ এএম, ১৪ এপ্রিল ২০১৬

আজ নতুন স্বপ্ন, উদ্যম ও প্রত্যাশার আলোয় রাঙানো নতুন বাংলা বছর, ১৪২৩ এর প্রথম দিন। বর্ষবরণের প্রথম দিনে বদলে যায় রাজধানী ঢাকার দৃশ্যপট। পান্তা ইলিশ রমনার বটমূল, শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মেতে উঠে সবাই।

কাকডাকা ভোর থেকেই নগরীর পথে পথে ঢল নামছে মানুষের। বাঙালি সংস্কৃতি লালনকারী আনন্দপিয়াসী নগরবাসীর। শিশু কিশোর, তরুণ-তরুণী সবার মধ্যেই যেন উৎসবের আমেজ। নববর্ষকে বরণ করতে বাবা-মার হাত ধরে শিশু কিশোরদের পদচারণায় মুখরিত রমনা প্রাঙ্গণ।

সবার বাবা মা যখন তাদের প্রিয় শিশু সন্তানদের হাত ধরে রমনাসহ আশেপাশের এলাকায় ঘুরে ঘুরে বৈশাখ উদযাপন করছে। শিশুদের বায়নায় বাবা খেলনা, বাশি, ডুকডুগি, একতারা, কিনে দিচ্ছে। ঠিক তখনই রাস্তার পাশে স্টিকারের দোকান দিয়ে শুভ আর সুজন তাকিয়ে অন্য শিশুদের আনন্দ দেখছে।

shuvo

সুজন আর শুভ দুই ভাই। তারা থাকে রাজধানীর শাজাহানপুরে। পড়ালেখাও করে তারা। বড় ভাই সুজন মতিঝিল সরকারি প্রাইমারি স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণিল ছাত্র। আর ছোট ভাই একই স্কুলের ৩য় শ্রেণিতে পড়ে। তাদের বাবা এলাকায় চিড়ামুড়ির দোকান ব্যবসায়ী।

প্রাণের উৎসব বাংলা বর্ষবরণে অংশ নিতে রমনা এলাকায় যখন রাজধানীবাসীর ঢল নেমেছে ঠিক তখনই কাকরাইল মসজিদের সামনের দিকে যেখানে উৎসবে অংশ নেয়া মানুষের স্রোত সেখানেই ফুটপাতে এই দুই ভাই মিলে করছে দোকনাদারী। কথা হয় এই দুই ভাইয়ের সাথে।

আজ কি জানো?
ছোটভাই (শুভ) : পহেলা বৈশাখ। দেখেন না গালে শুভ নববর্ষ লেখে নিছি।

ঘুরতে যাওনি কোথাও?
শুভ : ঘুরতে গেলে দোকানদারী করবে কে? অন্য দিন স্কুলে যাই, আজ স্কুল ছুটি তাই দুই ভাইকে আব্বা দোকান করে দিছে। সবাই ঘুড়ছে, নাচ গান করছে আমরাতো এখানেই বসে দেখছি।

shuvo

ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করে না?
শুভ : ইচ্ছা করে কিন্তু এখন দোকান ছেড়ে যাওয়া যাবে না। আব্বা বকা দিবে। `পার্কের ভিতরে না কি বানড় খেলা দেখাচ্ছে? খুবই আগ্রহ আর উৎসাহ নিয়ে জিজ্ঞেস করে শুভ।

হ্যাঁ দেখাচ্ছে, তুমি যাবে? এমন প্রশ্ন করলে, অনেকটাই অসহায়ের মত না সূচক মাথা নাড়ায় সে।

কত করে বিক্রি করছো এই স্টিকার?
বড় ভাই (সুজন) : দশ টাকা। আর কয়টা বিক্রি হলে একটা ডুগডুগি কিনবো। সবাই ডুগডুগি একতারা নিয়ে বাজাচ্ছে। আমারও খুব ইচ্ছা করেছে।

সবাই যখন নাচ গান হৈ-হুল্লোর করে বৈশাখী আয়োজনে অংশ নিচ্ছে। বাবা মা তাদের সন্তানদের বিভিন্ন খেলনা কিনে দিচ্ছেন, তখন সুজন-শুভ’র বৈশাখী আনন্দ বলতে শুধুই তাদের দিকে তাকিয়ে থাকা। তাদের পহেলা বৈশাখ মানে যেন অন্য শিশুদের আনান্দ দেখে বড় করে নিশ্বাস ফেলা।

এএস/এআরএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।