বিয়ের আগে কনেকে কিডন্যাপ করা রীতি যে দেশের

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৩৯ পিএম, ০৬ জানুয়ারি ২০২৪

বিশ্বের একেক দেশে বিয়ের রীতির রয়েছে আকাশ পাতাল পার্থক্য। কোথাও হচ্ছে বউ কেনার হাট কোথাও বা বর কনের পালিয়ে যাওয়া। বিশ্বের এমন একটি দেশ আছে যেখানে কনেকে বিয়ের আগে কিডন্যাপ করে নিয়ে যান বর। তবে এটি কিন্তু মোটেই মজা করে নয়। বরং সেখানে বিবাহযোগ্য কোনো পুরুষ যে কোনো মেয়েকে পছন্দ হলে জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করতে পারেন।

শুনতে অবাক লাগছে নিশ্চয়ই? যেখানে পুরো বিশ্বে নারীর অনুমতি ছাড়া জোরপূর্বক বিয়ে করা আইনে নিষিদ্ধ, সেখানে মুসলিম অধ্যুষিত দেশ কিরগিজস্তানে ঠিক তার একেবারেই উল্টো। এখানে আজো জোরপূর্বক বিয়ে একটি সাধারণ ব্যাপার। এর ফলে অল্পবয়সী মেয়েদের অপহরণের ঘটনা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনা অনেক বেশি এখানে।

আরও পড়ুন: বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরীদের বৈচিত্র্যময় বিবাহ প্রথা 

কিরগিস্তানে জোরপূর্ব্বক বিয়ের রমরমা সবচেয়ে গ্রামগুলোতে। দেশটির মোট ৬০ শতাংশ বিয়ের ক্ষেত্রে এই জোরপূর্বক বিয়ের ঘটনা ঘটে। এই ধরনের বিয়েকে নাম দেওয়া হয়েছে আল কাচুউ। রীতি অনুসারে, ছেলেরা দল বেঁধে একটি মেয়েকে খোঁজে এবং পছন্দ হলে সঙ্গে সঙ্গে তারা মেয়েটিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। আর এই সব ঘটনা প্রকাশ্যে ঘটে বলে জানা গেছে।

jagonews24

তবে একটা সময় কিরগিজস্তানে কনে অপহরণে করে বিয়ের বিরুদ্ধে একটি কড়া আইন ছিল। সেই সময় এই দেশটি সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সোভিয়েত ভেঙে গিয়ে কিরগিজস্তান আলাদা রাষ্ট্রের মর্যাদা পাওয়ার পর আইনের বিলোপ ঘটে।

দেশের নিয়ম অনুযায়ী ছেলেরা বিবাহযোগ্য হলেই, পরিবার তাকে আল কাচুউর দিকে প্ররোচিত করে। শুরু হয় কনের খোঁজ। টার্গেট করা হয় সুন্দরী ও সুস্থ মেয়েদের। আর এই জোরপূর্বক বিয়ের সবচেয়ে বেশি শিকার হয় দরিদ্র পরিবারের মেয়েরা। মেয়েকে অপহরণের পর নিয়ে যাওয়া হয় ছেলের বাড়িতে।

jagonews24

আরও পড়ুন: বিয়ে না হলে শরীরে মাখানো হয় দারুচিনির গুঁড়া 

এরপর ছেলের বাড়িতে হাজির হয় মেয়ের পরিবারের লোকজনও। অনিচ্ছা সত্ত্বেও অপহৃতকে বিয়েতে রাজি হতে হয়। যেহেতু দেশটি মুসলিম অধ্যুষিত, তাই বিয়েতে সম্মতি না দিলে পরবর্তীকালে ওই নারীর বিয়ে দিতে অসুবিধায় পড়তে হয় পরিবারকে।

এদিকে ছেলের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর অপহৃত নারীর মাথায় একটি সাদা স্কার্ফ জোর করে বেঁধে দেওয়া হয়। যার অর্থ মেয়েটি বিয়ের জন্য প্রস্তুত। অনেক সময় বয়সের কারণে বিয়ে করতে অস্বীকার করে অপহৃত। এরপর ছেলের বাড়ির লোকেরা মেয়েটিকে বোঝানোর চেষ্টা করে। তাদের বাড়ি, ধন-সম্পদ দেখিয়ে তাকে প্রলোভন দেখায়। তাতেও রাজি না হলে শুরু হয় মেয়েটির উপর অত্যাচার। যদি মেয়েটি কোনো অবস্থায় বিয়ে করতে রাজি না হয়, তাহলে ধর্ষণ ও খুন করতেও দ্বিধা করেন না তারা। ২০১৮ সালে এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল সেখানে।

সূত্র: ট্রাভেলস প্লাস, দ্য ইকোনোমিকস টাইমস

কেএসকে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।