৭ নভেম্বরের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন যে নোবেলজয়ীরা
তানজিদ শুভ্র
শিরোনাম দেখে অবাক হতে পারেন। ভাবতে পারেন নোবেল পুরস্কার তো দেওয়া হয় অক্টোবর মাসে, তাহলে ৭ নভেম্বরের সঙ্গে নোবেলের কী সম্পর্ক? ৭ নভেম্বরের সঙ্গে নোবেল পুরস্কারের সম্পর্ক না থাকলেও নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত ৬ জনের সঙ্গে দিনটি জড়িয়ে আছে। জড়িত থাকা মানুষ ৬ জন হলেও এদের একজন পেয়েছেন দুইবার নোবেল পুরস্কার। এবার জানা যাক তাদের কথা।
মারি ক্যুরি
নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রথম নারী বিজ্ঞানী মারি ক্যুরি। বিজ্ঞানেরই ভিন্ন দুটি ক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত একমাত্র ব্যক্তি মারি ক্যুরি পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন উভয় ক্ষেত্রেই অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। ফরাসি বিজ্ঞানী মারি ক্যুরি ১৮৬৭ সালের ৭ নভেম্বর পোল্যান্ডের ওয়ারশতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯০৩ সালে মারি ক্যুরি তার স্বামী পিয়েরে ক্যুরি এবং পদার্থবিদ হেনরি বেকেরেলের সঙ্গে পদার্থ বিদ্যায় নোবেল পুরস্কার জেতেন। তিনি এককভাবে ১৯১১ সালে রসায়নেও নোবেল পুরস্কার জেতেন।
আরও পড়ুন: যে দেশে বিদায়বেলায় ‘টাটা’ বললেই হতে পারে জেল
পদার্থবিজ্ঞানে তিনি নোবেল পান তেজষ্ক্রিয়তা নিয়ে কাজ করার জন্য। আর রসায়নে নোবেল পান পিচব্লেন্ড থেকে রেডিয়াম পৃথক করার জন্য। মারি ক্যুরি প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়েরও প্রথম নারী অধ্যাপক ছিলেন এবং তিনিই ছিলেন প্রথম নারী যার অসামান্য মেধার কারণে ১৯৯৫ সালে প্যান্থিয়নে সমাহিত করা হয়।
চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন
ভারতীয় পদার্থবিজ্ঞানী স্যার চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন ১৯৩০ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। নোবেল পুরস্কারের বিষয় ছিল আলোর বিচ্ছুরণের ক্ষেত্রে তার মৌলিক আবিষ্কার। ১৮৮৮ সালের ৭ নভেম্বর ভারতের তিরুচ্চিরাপল্লী জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭০ সালের ২১ নভেম্বর ৮২ বছর বয়সে মারা যান। বিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কার পাওয়ার জন্য তিনি প্রথম এশীয় এবং প্রথম অ-শ্বেতাঙ্গ ছিলেন। তার আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (ভারতীয়) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ১৯১৩ সালে।
কনরাড লরেঞ্জ
অস্ট্রিয়ান প্রাণীবিজ্ঞানী, নৃতাত্ত্বিক এবং পক্ষীবিদ কনরাড লরেঞ্জ জন্মগ্রহণ করেন ১৯০৩ সালের ৭ নভেম্বর। ১৯৭৩ সালে মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার লাভ করা কনরাড লরেঞ্জ পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। তার বাবা ছিলেন একজন সার্জন। পেশায় চিকিৎসক হলেও লরেঞ্জ প্রাণীদের মধ্যে সহজাত আচরণ অধ্যয়ন করেছেন। ১৯৮৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মারা যান কনরাড লরেঞ্জ।
আরও পড়ুন: সোনার চেয়েও যে কারণে দামি হাতির দাঁত
আলবের কাম্যু
সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আলবের কাম্যু জন্মগ্রহণ করেন ১৯১৩ সালের এই দিনে। তার মা, ক্যাথারিন হেলেন কাম্যু জাতিতে ছিলেন একজন ফরাসি; যদিও পৈতৃক সূত্রে তিনি স্প্যানিশ-বালেয়ারিক। তার বাবা, লুসিয়েন কাম্যু, ছিলেন একজন দরিদ্র কৃষিজীবী। কাম্যু ১৯৬০ সালের ৪ জানুয়ারি, ৪৬ বছর বয়সে ভিল্লেব্লেভিন নামক ছোট শহরের লে গ্রাঁদ ফসার্ডে সেন্সের কাছে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। ১৯৫৭ সালে ৪৪ বছর বয়সে, নোবেল ইতিহাসের দ্বিতীয়-কনিষ্ঠতম প্রাপক হিসেবে, তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার কাজগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দ্য স্ট্রেঞ্জার, দ্য প্লেগ, দ্য মিথ অব সিসিফাস, দ্য ফল এবং দ্য রেবেল।
এরিক কান্ডেল
অস্ট্রীয়-আমেরিকান স্নায়ুবিজ্ঞানী এরিক রিচার্ড কান্ডেল ২০০০ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার জন্ম ১৯২৯ সালের ৭ নভেম্বর ভিয়েনায়। তিনি স্নায়ুকোষে স্মৃতি সংরক্ষণের উপর গবেষণা করে নোবেল পুরস্কার পান। এরিক অস্ট্রীয়-আমেরিকান চিকিৎসক যিনি একাধারে মনোরোগ বিজ্ঞানী, স্নায়ুবিজ্ঞানী এবং একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, তিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অব ফিজিসিয়ান অ্যান্ড সার্জিয়নে প্রাণরসায়ন এবং প্রাণপদার্থবিদ্যা পড়ান।
মাইকেল স্পেন্স
মার্কিন অর্থনীতিবিদ অ্যান্ড্রু মাইকেল স্পেন্স ২০০১ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৪৩ সালের ৭ নভেম্বর নিউ জার্সিতে জন্মগ্রহণ তিনি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। বর্তমানে পরিবারের শোঞগে ইতালিতে বাস করছেন তিনি।
লেখক: শিক্ষার্থী ও ফিচার লেখক
কেএসকে/জেআইএম