গ্রামের তুলনায় শহরে ভূমিকম্পে ক্ষতি বেশি
২০১৫ সাল। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুভূত হয় ৭ দশমিক ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প। ক্ষতিগ্রস্ত হয় লাখ লাখ মানুষ। ঘর-বাড়ি, দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস, আদালত ভেঙে পড়ে। নেপালের সেই ভূমিকম্পে এগিয়ে এসেছিল পুরো বিশ্ব, বাদ যায়নি সামাজিক সংগঠনও। বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশ ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল। তবে এখনো তেমন ভূমিকম্প অনুভূত হয়নি। তবে সতর্কতার জুড়ি নেই।
গ্রামের তুলনায় শহরগুলোতে ভূমিকম্পে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়। উচু দালানের ভিড়ে ভূমিকম্প এলে গুঁড়িয়ে দেয় সব। ফাটল ধরে পাকা রাস্তায়। বিভিন্ন জায়গায় দেখা মিলে বিশাল গর্তের। দালানের চাপায় পৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু হয় হাজারও মানুষের।
ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেবে অত্যাধুনিক মেশিন, ক্ষতির পরিমাণ হবে কম; তবে এমন যন্ত্র এখনো আবিষ্কার হয়নি। তাইতো ভূমিকম্প এলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো যায় না। নিঃস্ব হয়ে যায় শত শত পরিবার। আপনজন হারায় হাজার হাজার মানুষ। এজন্য ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে নিতে হবে পূর্ব প্রস্তুতি এবং ভূমিকম্পের সময় সতর্ক থাকতে হবে সবাইকে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ অপচয় রোধে করণীয়
ভূমিকম্প হলে যা করবেন-
>> ভূমিকম্প হলে বেশিরভাগ মানুষ প্রথমেই যে ভুল করেন তা হলো আতঙ্কিত হওয়া। আতঙ্ক মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই আতঙ্কিত না হয়ে মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করুন।
>> বহুতল ভবনের ভেতর থাকলে খাটের নিচে কিংবা টেবিলের নিচে আশ্রয় নিন। সঙ্গে নিন বালিশ। কারণ এটি আপনাকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করবে।
>> ভূমিকম্পের সময় লিফট ব্যবহারের ভুলটি অনেকেই করেন। কেউবা আবার উচু দালান থেকে লাফিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় লিফট কিংবা লাফিয়ে নিচে আসা কোনোটিই নিরাপদ নয়। তাই কষ্ট হলেও সিঁড়ি ব্যবহার করুন।
>> ভূমিকম্পে অনেক সময় গ্যাসের লাইন ফেটে যায় কিংবা আগে থেকেই চুলা জ্বালানো থাকে। ভূকম্পন অনুভূত হলে প্রথমেই চুলা চুলা নিভিয়ে দিন। ভূমিকম্প শেষে গ্যাসের লাইন লিকেজ হয়েছে কি না দেখে নিন।
>> ভূমিকম্পের সময় ঘরের বাইরে থাকলে খোলা মাঠে আশ্রয় নিন। উঁচু গাছ, বৈদ্যুতিক খুঁটি এড়িয়ে চলুন। ভূমিকম্প থাকলে তবেই মাঠ থেকে বের হবেন। যদি কোনো শপিং মলে ভিড়ের মাঝে থাকেন তাহলে দুহাত মাথায় ডেকে নিচে বসে পড়ুন।
আরও পড়ুন: পরীক্ষায় পাস করতে গাছ লাগাতে হয় যে দেশে
>> যখনি কেউ উঁচু দালান নির্মাণ করবেন তখন অবশ্যই সরকারি নির্দেশনা মেনে নির্মাণ করবেন। অবৈধভাবে বিল্ডিং উঁচু করবেন না। প্রতিটি বাড়ি নির্মাণের মাঝে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখুন। এছাড়া অট্টালিকা নির্মাণে উন্নত মানের রড, সিমেন্ট ব্যবহার করুন। নিয়ম না মানলে ক্ষতি আমার, আপনার, সবার।
>> অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে গাছপালা কেটে ঘরবাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে শহরাঞ্চলে বনায়নের পরিমাণ কমে যাচ্ছে ফলে নরবরে হচ্ছে ভূমি। ভূমিকম্পে ক্ষতির আশঙ্কাও যাচ্ছে বেড়ে। তাই বনায়নের বৃদ্ধিতে মনোনিবেশ করতে হবে। শহরে জনসংখ্যার চাপ কমাতে উদ্যোগ নিতে হবে।
>> সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মোবাইল ফোন সঙ্গে রাখা। কারণ বিপদে পড়লে বা কোথাও আটকে পড়লে সাহায্য চাইতে পাবেন অন্যদের কাছে।
কেএসকে/জিকেএস