সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে সারা ফাউন্ডেশন
রুবেল মিয়া নাহিদ
আমিরুল ইসলাম রাসেলের জন্ম ও বেড়ে ওঠা চাঁদপুরের মতলবে। ২০১৬ সালে গড়ে তোলেন সেচ্ছাসেবী সংগঠন সারা ফাউন্ডেশন। কৃষক পরিবারের সন্তান হয়েও স্বপ্ন দেখতেন অসহায় মানুষের জন্য কিছু করার। বাবার টাকা ছিল না বলে অল্প বয়সেই কাজে নামতে হয়েছিল তাকে। যখন বেশিরভাগ ছেলে-মেয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পরই বিভিন্ন কাজে নামতো সংসারের হাল ধরার জন্য।
আমিরুল ইসলাম রাসেলের ইচ্ছা, বাকিদের জীবন যেন তার মতো না হয়। তাই বন্ধু ও সহপাঠীদের নিয়ে বসলেন, কী করা যায়? বয়সে তরুণ একদল উদ্যমী ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তন করার ব্রত নেন। প্রথমেই তাদের পক্ষ থেকে পাঠাগার করা হয়। এ পর্যন্ত ৯টি পাঠাগার নির্মাণ করেছেন তারা।
মসজিদে বয়স্কদের জন্য কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার চেষ্টা করেন। ২০১৬ সাল থেকে সংগঠনটি বিভিন্ন মাদ্রাসায় মাসে দুই-তিন বার খাবারের আয়োজন করে। এ পর্যন্ত ১৪৭টি মাদ্রাসার এতিমখানায় এক বেলা ভালো খাবারের আয়োজন করেছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুন: ‘সেভ সিলেট’র সহায়তায় স্কুলে ফিরলো সুবিধাবঞ্চিত শিশু
অসহায় মানুষদের চিকিৎসাসেবা, বৈষম্য দূর করা, অসহায় মেয়ের বিয়েসহ যে কোনো সমস্যায় তাদের কাছে গেলে সেবা পাওয়া যায়। তারা এতিম বাচ্চাদের নতুন পোশাক, ৩ হাজার শীতবস্ত্র, ১ হাজার ৭০০ পরিবারকে ঈদসামগ্রী ও ইফতারসামগ্রী, দুর্যোগে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। এমনকি ঈদে বাবা ও বাচ্চাদের জন্য নতুন পোশাক বিতরণ করেন।
পাশাপাশি কিছু অসহায় পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে হুইলচেয়ার ও সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়। অসহায়দের ৪৬টি হুইলচেয়ার, বিধবা ও অসহায় পরিবারকে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে ২৩টি সেলাই মেশিন উপহার দেওয়া হয়েছে।
তাদের মূল উদ্দেশ্য বহুতল একটি ভবন নির্মাণ করা। যেখানে থাকবে অসহায় বাবা-মা ও এতিম শিশুদের শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা। কখনো আবার চিকিৎসার সাহায্য হিসেবে ১৭ জন অসহায় রোগীকে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। করোনাকালে ফ্রি অক্সিজেন সেবাও দিয়েছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুন: পাঁচ টাকায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ঈদ কেনাকাটা
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে আমিরুল ইসলাম রাসেল বলেন, ‘একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করতে চাই। হয়তো কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি আমাদের স্বপ্নপূরণে পাশে দাঁড়াবে। এই আশায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
লেখক: তড়িৎ প্রকৌশলী ও ফিচার লেখক।
এসইউ/জিকেএস