আগের মতো বিক্রি হচ্ছে না সবুরা বেগমের চুড়ি

আবু সালেহ মুসা
আবু সালেহ মুসা আবু সালেহ মুসা , ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ০১:২৫ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০২২

ঢাকা যেন গল্পের শহর। এ শহরে ছড়িয়ে আছে বিচিত্র সব গল্প। যার কিছু গল্প মন জুড়ায়, কিছু গল্প অশ্রু ঝরায়। এ শহরেরই একজন সবুরা বেগম। বয়স ঠিক ৬০ পেরিয়ে গেলেও ভাগ্যের ঠাঁই মেলেনি এখনও।

সংসারের ঘানি একাই টেনে চলছেন সবুরা বেগম। স্বামী অসুস্থ থাকায় কোনো কাজ করতে পারেন না। তাই সবুরার আয়ের ওপরই নির্ভর করে চলতে হয় পুরো পরিবারকে।

সবুরা বেগমের চেহারায় বয়সের ছাপ। করতে পারেন না ভারী কোনো কাজ। তাই তো দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ তিতুমীর কলেজের প্রধান ফটকে বসে বিক্রি করছেন বাহারি রঙের চুড়ি। এখান থেকে যা আয় হয়, তা দিয়েই চলে সংসার।

হঠাৎ বেড়েছে দ্রব্যমূল্য। তাই চেহারায় নতুন করে চিন্তার ছাপ ফুটে উঠেছে সবুরা বেগমের। যার ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’; সে এখন কীভাবে সংসার চালাবে? কীভাবে জোগাড় হবে স্বামীর ওষুধ? এসব ভেবেই যেন দিশেহারা তিনি।

আক্ষেপের সুরে সবুরা বেগম বলেন, ‘এখন তো আর আগের দিন নাই। সব জিনিসের দাম বাড়ছে। আগের মতো চুড়ি বিক্রি হয় না। যা বিক্রি হয়, তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। আগে দিনে ২,০০০-২,৫০০ টাকা বিক্রি হইতো। এখন ৫০০-১,০০০ টাকা বিক্রি করাই কঠিন।’

তিনি বলেন, ‘যে চুড়ি ৪০ টাকায় বিক্রি করতাম, সেই চুড়ি এখন ৪০ টাকায় কিনি। দাম বাড়ায় মেয়েরা চুড়ি কিনতে চায় না। তারপরও আল্লাহ চালায়। খেয়ে না খেয়ে কোনো রকমের দিন পার করি।’

তার মতো অনেক সবুরা বেগমকে রাজধানীর অলিতে-গলিতে দেখা যায়। যারা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে চুড়ি, খেলনা, খাবার বিক্রি করেন। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তাদের জীবনকে করেছে দুর্বিষহ। এখন দু’বেলা খেয়ে-না খেয়েই কেটে যাচ্ছে জীবন।

সবুরা বেগমদের চাওয়া খুব বেশি বড়। অল্প আয় দিয়েই তারা একটি সুস্থ-সুন্দর জীবন নিয়ে বাঁচতে চান। তাই আসুন, তাদের জীবনধারণে আমরা একটু মানবিক হই।

লেখক: ফ্রিল্যান্স ফিচার লেখক।

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।