আয়কর রিটার্ন জমা দেবেন যেভাবে

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৫১ পিএম, ০৭ নভেম্বর ২০২২

৩০ নভেম্বর দেশে আয়কর দিবস হিসেবে পালিত হয়। এদিনই ব্যক্তি করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমার শেষ তারিখ। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত আয়কর মেলায় করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন।

সাধারণত প্রতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই পাঁচ মাস জরিমানা ছাড়া বার্ষিক আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া যায়। এই সুযোগ পাবেন ৩০ নভেম্বর অর্থাৎ আয়কর দিবসের দিন পর্যন্ত।

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী যাদের ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর বা টিআইএন রয়েছে তাদের জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। তবে রিটার্ন দাখিল করলেই যে আয়কর দিতে হবে তা নয়। কারো আয় যদি করযোগ্য না হয় তাহলে কর দেওয়ার প্রয়োজন নেই, শুধু রিটার্ন জমা দিলেই হবে।

চলুন দেখে নেওয়া যাক আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার নিয়ম-

আয়কর রিটার্ন দাখিল করার কাজটি মূলত আয়কর অফিসে গিয়ে করতে হয়। তবে এখন অনলাইনেও করা যায়। যদি অফলাইনে করতে চান তাহলে আয়কর অফিস থেকে নির্দিষ্ট ফরম নিয়ে পূরণ করে জমা দিলেই কাজ শেষ।

তবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার জন্য নির্দিষ্ট ফরমের সঙ্গে বেশ কিছু কাগজপত্রও যুক্ত করতে হয়। এই কাগজপত্রগুলো মূলত করদাতার আয়ের উৎস ও পরিমানের প্রমাণ হিসেবে প্রয়োজন হয়। করদাতাকে রিটার্ন দাখিলের সময় ভিন্ন ভিন্ন খাত অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন ধরনের কাগজপত্র প্রদর্শন করতে হতে পারে। যেমন-

বেতন খাত
করদাতা যদি সরকারি বা বেসরকারি বেতনভুক্ত কর্মকর্তা হন তাহলে তাকে যেসব নথিপত্র সংযুক্ত করতে হবে তা হলো-

>> বেতন বিবরণী
>> ব্যাংক হিসাব থাকলে কিংবা ব্যাংক সুদ খাতে আয় থাকলে ব্যাংক বিবরণী বা ব্যাংক সার্টিফিকেট
>> বিনিয়োগ ভাতা দাবি থাকলে তার স্বপক্ষে প্রমাণাদি। যেমন- জীবন বিমার পলিসি থাকলে প্রিমিয়াম পরিশোধের প্রমাণ।

নিরাপত্তা জামানতের সুদ খাতে

>> বন্ড বা ডিবেঞ্চার যে বছরে কেনা হয় সে বন্ড বা ডিবেঞ্চারের ফটোকপি
>> সুদ আয় থাকলে সুদ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়নপত্র
>> প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ নিয়ে বন্ড বা ডিবেঞ্চার কেনা হয়ে থাকলে ঋণের সুদের সমর্থনে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সার্টিফিকেট বা ব্যাংক বিবরণী বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রত্যয়নপত্র রিটার্নের সঙ্গে জমা দিতে হবে।

গৃহ-সম্পত্তি খাতে

>> বাড়িভাড়ার সমর্থনে ভাড়ার চুক্তিনামা বা ভাড়ার রশিদের কপি, মাসভিত্তিক বাড়িভাড়া প্রাপ্তির বিবরণ এবং প্রাপ্ত বাড়িভাড়া জমা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব বিবরণী
>> পৌর কর, সিটি করপোরেশন কর, ভূমি রাজস্ব প্রদানের সমর্থনে রশিদের কপি
>> ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে বাড়ি কেনা বা নির্মাণ করা হয়ে থাকলে ঋণের সুদের সমর্থনে ব্যাংক বিবরণী ও সার্টিফিকেট
>> গৃহ-সম্পত্তি বিমাকৃত হলে বিমা প্রিমিয়ামের রশিদের কপি রিটার্নের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে।

ব্যবসা বা অন্যান্য পেশা খাতে
ব্যবসা বা অন্যান্য পেশার আয়-ব্যয়ের বিবরণী ও স্থিতিপত্র আয়কর রিটার্নের সঙ্গে জমা দিতে হবে।

অংশীদারি ফার্মের আয়
অংশীদারি ফার্মের ব্যবসা থাকলে ফার্মের আয়-ব্যয়ের বিবরণী ও স্থিতিপত্র জমা দিতে হবে।

মূলধনী লাভ
>> স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় কিংবা হস্তান্তর হলে তার দলিলের কপি
>> উৎসে আয়কর জমা হলে তার চালান বা পে-অর্ডারের ফটোকপি এবং
>> পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার লেনদেন থেকে মুনাফা হলে এ সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র রিটার্নে সঙ্গে জমা দিতে হবে।

অন্যান্য উৎসের আয়ের খাত
>> নগদ লভ্যাংশ খাতে আয় থাকলে ব্যাংক বিবরণী, ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্টের কপি বা সার্টিফিকেট
>> সঞ্চয়পত্র হতে সুদ আয় থাকলে সঞ্চয়পত্র নগদায়নের সময় বা সুদ প্রাপ্তির সময় নেওয়া সার্টিফিকেটের কপি
>> ব্যাংক সুদ আয় থাকলে ব্যাংক বিবরণী কিংবা সার্টিফিকেট
>> অন্য যে কোনো আয়ের উৎসের জন্য প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র।

কেএসকে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।