সবার মুখেই হাসি কেউ ফিরেনি খালি হাতে
‘হতভাগা’ মেম্বার অব দি ক্র্যাব পুরস্কার জিতে নিয়েছেন ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি আবুল হোসেন। ক্র্যাব সভাপতি আখতারুজ্জামান লাবলু মঞ্চ থেকে যখন এ নামটি ঘোষণা করছিলেন তখন মঞ্চের ভেতর বাইরে ক্র্যাব পরিবারের সদস্যদের মধ্যে হাসির রোল যেন থামতেই চাইছিল না।
কেউ একজন উচ্চস্বরে প্রশ্ন ছুঁড়েন, তা বড় ভাই তিনি পেলেনটা কী। সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম লাবলু মাইক হাতে নিয়ে বললেন, আপনারা জানেন, সাধারণ নিয়মে লটারি ভাগ্যে ড্রতে যাদের নাম উঠে তিনি বা তারা পুরস্কার পান।
কিন্তু এবার আমরা নির্ধারিত লটারির বাইরে দেখতে চেয়েছি আমাদের মধ্যে কে হতভাগা মেম্বার যার নাম দুইশ’ লটারি ড্র কালীন সময়েও উঠেনি। তার ‘দুভার্গ্যর’ জন্য একটি দামি ডিনার সেট দেয়া হলো। পুরস্কারপ্রাপ্ত আবুল হোসেন হেসে বলেন, হতভাগা হলেও তিনি লটারিতে এই প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় গোধুলীতে এমনই এক দৃশ্যের অবতারণা হয় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্র্যাব) এর বার্ষিক পিকনিক ও ফ্যামিলি ডে অনুষ্ঠানে। অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মিলনমেলা বসেছিল ঢাকার অদূরে সাভারের আমিনবাজারে মধুমতি মডেল টাউনে। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রধান ও শেষ আকর্ষণ লটারি অনুষ্ঠানে।
লটারিতে অংশগ্রহণকারী ক্র্যাব সদস্যরা সবাই হাসি মুখে ফিরেছেন, কেউ খালি হাতে ফিরেননি। মোট ১৯৬টি ড্রয়ের পুরস্কার থাকলেও কেউ যেন খালি হাতে না ফিরে সেজন্য ড্রতে যাদের নাম আসেনি কেউ পাঁচজনকে পুরস্কার দেয়া হয়।
লটারিতে ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা রিটার্ন রিজেন্ট এয়ারের টিকেটসহ পাঁচতারকা হোটেলে দম্পত্তিসহ অবকাশ যাপনের প্রথম পুরস্কার পান যায় যায় দিনের অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদক দেব দুলাল মিত্র। দ্বিতীয় পুরস্কার ৩২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন পান এস এ টিভির রিয়াদ। খুব আতঙ্কিত ছিলেন তিনি লটারি ফুরিয়ে আসছে কিন্তু তার নাম আসছেনা, এক পর্যায়ে তিনি নিজেই লটারিতে দ্বিতীয় পুরস্কারের টিকেটটি জিতে নেন।
দিনব্যাপী পিকনিক ও ফ্যামিলি ডে’র অনুষ্ঠানটি সাত শতাধিক সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের দৌড়, ক্র্যাব সদস্যের স্ত্রী ও মেয়ে রিপোর্টারদের অংশগ্রহণে বালিশ খেলা ও হাড়ি ভাঙ্গা খেলাকে ঘিরে আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
বালিশ খেলায় বাদ পড়ে ভাবিদের আবার খেলার বায়না করা ও হাড়ি ভাঙ্গতে গিয়ে পথ ভুলে ঝোপের মধ্যে লাঠি কোপ হাস্যরসের উদ্রেক হয়। সবাইকে কমন গিফটও দেয়া হয়।
দুপুরে খাবারের তালিকায় দিনাজপুরের চিকন সাদা চালের ভাত, চিংড়ি দোপেয়াজা, মুড়িঘণ্ট, মুরগী ও খাসির মাংস ও সব শেষে বগুড়ার অরিজিনাল সুস্বাদু দই খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলেন সবাই। নবাগত সঙ্গীত শিল্পীদের পাশাপাশি ক্র্যাব সদস্য ও তাদের ছেলেমেয়েদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটিও ছিল বাড়তি বোনাস।
ক্র্যাবের সভাপতি আকতারুজ্জামান লাবলু বলেন, ক্র্যাব পরিবারের বার্ষিক পিকনিক ও ফ্যামিলিকে আনন্দমুখরিত করে তুলতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তারা নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। তিনি ঢাকা জেলার এসপিসহ পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতার কথা জানান। ক্র্যাব নেতাদের আমন্ত্রণে পুলিশ হেডকোয়াটার্স, ঢাকা জেলার এসপি ও র্যাবের মিডিয়া উইং কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। লটারিতে সবাই কিছু না কিছু পেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বাড়ি ফিরেন। ভাঙ্গে র্যাব পরিবারের মিলনমেলা।
এমইউ/জেএইচ/এমএস