পাঁচদিনেও মেলেনি প্রাথমিকের বই!
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বুড়া সারডুবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শতাধিক ক্ষুদে শিক্ষার্থীর ভাগ্যে পাঁচদিনেও মেলেনি বিনামূল্যের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বই। এতে হতাশ ও ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে বুড়া সারডুবি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের অফিস কক্ষে শিক্ষকদের কেউ নেই। এসময় সেখানে বসে আছেন বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আব্দুর রহিম দুলাল ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ফেরদৌস আলম প্রিন্স। শ্রেণি কক্ষগুলো পুরোপুরি ফাঁকা পড়ে আছে। বাইরে স্কুল মাঠেই খেলাধুলা করছিল প্রায় দুই শতাধিক ক্ষুদে শিক্ষার্থী।
ক্লাস ছেড়ে বাইরে কেন? এমন প্রশ্নে শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে বলে ওঠে, ‘আমরা এখনো বই পাইনি। তাই পড়তে পারছি না।’ ফলে এসব শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন সময় মতো স্কুলে এলেও শুধু খেলাধুলা করেই খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে তাদের।
রফিকুল ইসলাম নামের এক অভিভাবক জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বই না পেয়ে প্রতিদিনই কান্না-কাটি করছে সে। ফলে তাকে নিয়ে প্রায় পাঁচদিন ধরে স্কুল যাওয়া-আসা করলেও নতুন বই পাচ্ছি না।’ একই কথা বলেন সেখানে উপস্থিত অনেক অভিভাবক।
মিমি খাতুন ও হাজেরা খাতুন নামের দুই অভিভাবক জানান, তারা তাদের ছেলে-মেয়েকে ভর্তি করাতে কয়েকদিন ধরেই স্কুলে আসছেন। কিন্তু স্কুলে কোনো শিক্ষক উপস্থিত না থাকায় প্রতিদিনই ওই দুই অভিভাবক বাড়ি ফিরছেন বলে জানান।
বুড়া সারডুবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুস ছাত্তারের জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি হাতীবান্ধা শিক্ষা অফিসে বই তুলতে এসেছি।’ কিন্তু এতদিন পরে বই তুলছেন কেন? এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, গত নভেম্বর মাসে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ অবসরে গেছেন। সে কারণে দায়িত্ব নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় এমনটি হয়েছে বলে দাবি করেন।
হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান আতিকুর রহমানের জাগো নিউজকে বলেন, নভেম্বরের ২৭ তারিখের মধ্যে প্রতিটি বিদ্যালয়ে বই পাঠানো হয়েছে। এরপরেও বুড়া সারডুবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গত পাঁচদিনে বই পায়নি কেন? এমন প্রশ্নের কোনো সদূত্তর দিতে পারেননি ওই শিক্ষা কর্মকর্তা।
রবিউল হাসান/বিএ