দুই দেশের বাসিন্দা রেজাউল


প্রকাশিত: ১১:৪০ এএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা থেকে ঘণ্টা তিনেকের পথ। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাগদা ব্লকের বয়রা গ্রাম। এই গ্রামের রেজাউল মণ্ডল বাংলাদেশ এবং ভারত দুই দেশেরই বাসিন্দা।

৬৫ বছর বয়সী রেজউল সীমান্তের এপার-ওপার নিয়ে সমতা রক্ষা করে চলেন। তার দুটো ঠিকানা। ভারতের কাছে বাগদা ব্লকের বয়রা গ্রামের লোক। আবার বাংলাদেশের কাছে পরিচিত যশোর জেলার গদাধরপুরের বাসিন্দা। দু’পারের সীমান্তরক্ষীদের কাছে মণ্ডল পরিবারের পরিচিতি ৩৯/১১ পিলারের বাসিন্দা হিসেবে।
 
দেশ ভাগের সময়ে বাড়ির উঠোনের মাঝ-বরাবর চলে গেছে দেশভাগের রেখা। ফলে বসতবাড়িও দেশ ভাগের মত ভাগ হয়ে অর্ধেক পড়ে থাকে ভারতে। বাকি অর্ধেক চলে যায় বাংলাদেশের মধ্যে। কাঁটাতারের বেড়া বসেনি। কিন্তু দিনরাত চলে বিএসএফ আর বিজিবি-র নজরদারি।

এক সময়ের ধনী ও সম্ভ্রান্ত মণ্ডল পরিবারকে দেশ ভাগের সময় বাংলাদেশে থাকা বিষয় সম্পত্তি খোয়াতে হয়ছে। এখন সম্বল বলতে সীমান্ত মধ্যবর্তী ১৬ বিঘা জমি। যার ৭ বিঘা বাংলাদেশে আর ৯ বিঘা ভারতে।

চাষের জমিরও অর্ধেক ভারতে, অর্ধেক বাংলাদেশে। চাষের পর আগে দু’দেশের অনুমতি নিয়ে সাড়ে দশ মন ধান ভারতে নিয়ে যেতে পরতেন। সীমান্তরক্ষীদের অনুমতির সেই কাগজপত্র আজও সযত্নে রেখেছেন তিনি। কিন্তু এখনকার নিয়মে বাংলাদেশের ফসল বাংলাদেশের বাজারেই বেচে দিতে হয়।

বাংলাদেশের ৯নং স্বরূপদাহ ইউনিয়ন পরিষদে নিয়মিত ট্যাক্স জমা দিতে হয় তাকে। আর ভারতের ট্যাক্স তো আছেই। উত্তর বয়রা গ্রামে প্রায় ৬০ ঘর বাসিন্দা। সব বাড়িই সীমান্তের পিলার ঘেঁষা। কিন্তু অর্ধেক ভারতে, অর্ধেক বাংলাদেশে এমন বাসিন্দা কেবল মণ্ডল পরিবারই। সংসারও ছড়িয়ে পড়ছে দুই দেশে। রেজউল মণ্ডল মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন যশোরে। এক ছেলে হাফিজুর কাজ করেন কলকাতা পুলিশে।

এসএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।