সাড়ে ৪ লাখ মৌমাছি শরীরে নিয়ে দিব্যি দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি!
একটি মৌমাছি শরীরে কামড় দিলেই সে স্থান ফুলে বালিশ হয়ে যায়। সেইসঙ্গে ব্যথা ফ্রি! অথচ এ ব্যক্তি কি-না ৪ লাখ ৬০ হাজার মৌমাছি শরীরে নিয়ে দিব্যি দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি একজন চীনা মৌমাছি পালনকারী। এই বিশেষ কার্মকাণ্ডের কারণে রেকর্ডও গড়েছেন তিনি।
তার নাম পিং। বর্তমানে তার বয়স ৪১ বছর। চিনের এ বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সে রেকর্ড গড়েন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এ জাদুকরী কর্মকাণ্ড দেখিয়ে আসছেন। তিনি নগ্ন শরীরে মধু মেখে দাঁড়িয়ে থাকেন। মধুর আকর্ষণে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি তার শরীরে বসে মধু খেতে থাকে। অথচ পিং দিব্যি দাঁড়িয়ে থাকেন জীবন্ত মৌচাক হয়ে।
এভাবেই জাদুকরী স্টান্ট দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পং মধু বিক্রি করে আসছেন। তিনি চিনের মেগা-শহর চংকিংয়ের বাসিন্দা। এ স্টানটি করার সময় পিং একেবারেই শ্বাসবন্ধ করে থাকেন। কতটা অবাক করা বিষয় ভাবুন একবার! মৌমাছির ঝাঁক তার পুরো শরীর নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়।
তবে কেন এমন অদ্ভুত ও ঝুঁকিপূর্ণ খেলায় মেতে উঠেছেন পিং? এ বিষয়ে তিনি জানান, ‘আমার বয়স যখন ১২ বছর; তখন থেকেই আমি মজার ছলে এটি করতে শুরু করি। অনেক সময় মানুষ আসল মধু চিনতে পারেন না। তাদেরকে আসল মধু চেনাতে ও বিক্রির উদ্দেশ্যেই আমি এমন স্টান্ট করি। মৌমাছি নিশ্চয়ই নকল মধুতে মুখ দেবে না!
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে একটি দু’টি মৌমাছি শরীরে নিতে নিতে এখন লাখ লাখ মৌমাছি আমার শরীরে বসলে কিছুই উপলব্ধি করতে পারি না। বিষয়টি আমার জন্য সহজ হয়ে গিয়েছে।’
স্ত্রী এবং পাঁচ সহযোগীর সাহায্যে পিং এ স্টান্ট করে দেখান। এটি যতটা চিত্তাকর্ষক; ঠিক ততটাই ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিবার ১৫ মিনিট নিঃশ্বাস বন্ধ করে মৌমাছিদেরকে শরীরে নেন পিং। এই পদ্ধতিতে একটি রানি মৌমাছিকে ছোট একটি খাঁচায় নিয়ে দেহের সঙ্গে ঝুলিয়ে দিতে হয়। এর মাধ্যমে অন্য মৌমাছিদের আকৃষ্ট করা হয়।
কীভাবে তার শরীরে এতো মৌমাছি বসে তা জানাতে গিয়ে পিং বলেন, ‘এর জন্য শরীরকে আগে থেকেই প্রস্তুত করতে হয়। আমি শরীরে কোনো প্রকার সাবান ব্যবহার করি না। এ কারণে মৌমাছিরা আমার শরীরে আকর্ষণবোধ করে।’
চীন বিশ্বের অন্যতম প্রধান মধু উত্পাদক। তবে নকল মধুর ভয়ে বেশ কয়েকটি দেশে এর রফতানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পিং দাবি করেন, তার এ স্টান্টটি প্রমাণ করে তারা আসল মধু উৎপাদন করে থাকেন। প্রতারকচক্রের কারণে অর্থনৈতিকভাবে তারা পিছিয়ে পড়ছেন।
তবে এর আগে ভারতের ভিপিন শেঠ পুরো দেহ মৌমাছি দিয়ে আবৃত করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লিখিয়েছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি পুরো শরীরে ৬ লাখ ১৩ হাজার মৌমাছির জায়গা দিয়েছিলেন। তার জীবন্ত মৌচাকের ওজন হয়েছিল ১৩৬ পাউন্ড।
তবে একটুর জন্য পিংয়ের চেষ্টাটি বিশ্ব রেকর্ডের চেয়ে কম। তবে অর্ধনগ্ন শরীরে স্টান্ট করার ক্ষেত্রে তিনি রেকর্ড গড়েছেন বলে দাবি করেন পিং। তার শরীরে বসেছিল ৪ লাখ ৬০ হাজার মৌমাছি এবং জীবন্ত মৌচাকের ওজন গিয়ে দাঁড়ায় ১০০ পাউন্ডে।
সিএনএন/ দ্য গার্ডিয়ান/জেএমএস/জিকেএস