বিশ্ব কাঁপানো আলোচিত ৫ অপারেশন
অডিও শুনুন
আন্ডারকভার এজেন্ট, সিক্রেট সার্ভিস, কভার্ট অপারেশনের নাম শুনলেই চোখে ভেসে ওঠে সিআইএ, এফএসবি, এমআই সিক্স, মোসাদের মতো বিশ্বখ্যাত সব সিক্রেট সার্ভিস এজেন্সির নাম। অথবা মনে পড়ে কুখ্যাত সব মিলিটারি স্কোয়াডের কথা। এমনই বিশ্ব কাঁপানো ০৫টি কভার্ট অপারেশন সম্পর্কে জানবো আজ। যা শুনলে আপনিও হয়তো শিউরে উঠবেন।
হিটলারকে হত্যার ছক: একে বলা হয় অপারেশন ভালকিরি। এ অপারেশন ছিল হিটলারকে হত্যা করার ছক। জার্মান সেনা বাহিনীতে তখন হিটলার বিরোধী হাওয়া। সেনা কর্মকর্তা ক্লাউজ ভন স্টাফেনবার্গ হিটলারকে মারার পরিকল্পনা করেন। তার সঙ্গে হাত মেলায় কয়েকটি নাৎসি বিরোধী সংগঠনও। দু’বার পরিকল্পনা করেও পিছিয়ে এসেছিলেন ক্লাউজ।
তবে ১৯৪৪ সালের ২০ জুলাই ঘনিষ্ঠদের নিয়ে কনফারেন্সে বসেছিলেন হিটলার। কর্নেল ক্লাউজ কনফারেন্স হলে ঢোকেন। হিটলারের পাশে বসে টেবিলের সামনে একটি ব্রিফকেস রেখে কিছুক্ষণ পর বের হয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পরই হিটলারের ফোন আসে। কথা বলার জন্য তিনি কিছুটা দূরে সরে যান। এ সময় বিস্ফোরণ হয়। হিটলার এতে প্রাণে বাঁচলেও মারাত্মকভাবে আহত হন।
লাদেনকে হত্যার অভিযান: এর নাম দেওয়া হয় অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার। পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের বিলাল টাউনে ওসামা বিন লাদেনের সেফ হাউসে হানা দেয় মার্কিন স্পেশাল স্কোয়াড। রাতের অন্ধকারে এ স্কোয়াড দুটি ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার ও দুটি চিনক্স নিয়ে ল্যান্ড করেছিল মার্কিন সেনা বাহিনী।
এ ছাড়া অ্যাবোটাবাদের অদূরেই ঘাঁটি গেড়েছিল মার্কিন নৌসেনা। লাদেনের সেফ হাউসের তিন তলায় তাকে খুঁজে পেতেই দু’বার গুলি করা হয়। এরপর দেহকে সাগরের পানিতে ছুঁড়ে ফেলে দেয় তারা।
যাত্রীবাহী বিমান হাইজ্যাক: এর নাম অপারেশন এন্তেবে। এটি ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক দুঃসাহসিক অভিযান। ১৯৭৬ সালের ০৪ জুলাই এয়ার ফ্রান্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করে ফিলিস্তিন জঙ্গিরা। এথেন্স থেকে প্যারিস যাওয়ার পথে বিমানটিকে হাইজ্যাক করে নামানো হয় উগান্ডার এন্তেবে বিমান ঘাঁটিতে।
গভীর রাতে সেখানে অভিযান চালায় ১০০ ইসরায়েলের কমান্ডো। তিনটি হারকিউলিস হেলিকপ্টারে করে সেখানে নামে কমান্ডো বাহিনী। এ আচমকা হানায় হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল জঙ্গিরা। মাত্র ৩৫ মিনিটে অপারেশন শেষ হয়েছিল। এতে তিন জন পণবন্দি ও একজন কমান্ডারের মৃত্যু হয়। বাকি সবাইকে নিরাপদে মুক্ত করা হয়।
মুসোলিনিকে উদ্ধারে অভিযান: এর নাম অপারেশন আইচ। এ অপারেশেনর পরিকল্পনা করেছিলেন হিটলার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সিসিলির আক্রমণে ইতালির পতন হয়। মুসোলিনি গ্রেফতার হন। ইতালির গ্রান সাসো এলাকায় বন্দিজীবন কাটান তিনি। তাকে উদ্ধার করতে অপারেশন প্ল্যান করেন হিটলার। অত্তো সাকোরজি নামে এক এজেন্টকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
দায়িত্ব পেয়ে মুসোলিনির লোকেশন জানার পর সেখানে প্যারাট্রুপের মাধ্যমে হামলা চালায় সাকোরজি। এ অপারেশনে প্যারাট্রুপের একজন নিহত হন। তবে মুসোলিনিকে উদ্ধার করা হয়েছিল।
১০ বছর ধরে অভিযান: এর নাম দেওয়া হয়েছিল অপারেশন ওয়ার্থ অব গড। ইসরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ এ অপারেশন চালিয়েছিল। ১৯৭২ সালে মিউনিখ অলিম্পিকের সময় ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর নামে একটি সংগঠন ১১ জন ইসরায়েল অ্যাথলেটকে অপহরণের পর হত্যা করে। এর প্রতিশোধ নিতে এ অপারেশনের প্ল্যান করে মোসাদ।
প্রায় ১০ বছর ধরে ১২ জন জঙ্গিকে খুঁজে খুঁজে হত্যা করেছিল মোসাদ। যা গুপ্তচরবৃত্তির ইতিহাসে আজও মহাকাব্য বলে মনে করা হয়।
এসইউ/এএ/এমকেএইচ