মিষ্টির মাঝে বেঁচে আছেন বিনয় সাহা

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ০৫:১১ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের একজন কীর্তিমান মানুষ বিনয় সাহা। ‘বিনাশা’ হিসেবে তিনি পরিচিত শুধু ছানা মিষ্টির কৌশল জানার কারণে। তিনি পরলোক গমন করেছেন বছরখানেক আগে। কিন্তু মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন তার বিখ্যাত মিষ্টির জন্য।

তার মিষ্টি ভান্ডারের নাম ‘বিনয় মিষ্টি মুখ’। লোকে বলে ‘বিনাশার মিষ্টি’। দক্ষিণ সন্দ্বীপের প্রাণকেন্দ্র শিবের হাটে বিনয় বাবুর বিখ্যাত সেই মিষ্টি দোকানের অবস্থান। এ মিষ্টির জনপ্রিয়তা জেলা ছাড়িয়ে চলে গেছে বিদেশেও। স্থানীয়দের কাছে তার মিষ্টি যেন লোভনীয় এক নাম।

jagonews24

জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে বিনয় বাবুর বাবা সত্যকান্ত সাহার হাত ধরে এ মিষ্টির যাত্রা। বাবার কাছ থেকে শিখেছিলেন মিষ্টি বানানোর কৌশল। তখন বাবার সাথে সন্দ্বীপে হারিয়ে যাওয়া ন্যায়ামন্তি ইউনিয়নে দোকান করতেন। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে ১৯৬০ সালে দোকানটি শিবের হাটে নিয়ে আসেন। এখানে তার নামে ‘বিনয় মিষ্টি মুখ’ নামকরণ করেন। শুরুতে নিজেই ছিলেন এ মিষ্টির কারিগর। অল্প সময়ে তার মিষ্টির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এখনো সুনামের সাথে এ মিষ্টির ব্যবসা টিকে আছে। কেননা তার ৪ সন্তান পরিতোষ সাহা, প্রাণোতোষ সাহা, প্রিয়তোষ সাহা ও সন্তোষ সাহাকেও তিনি শিখিয়েছেন এ মিষ্টি বানানোর কৌশল।

বিভিন্ন আকারের মিষ্টি তৈরি হয় এখানে। একটু বড় মিষ্টি ২০ টাকা, মাঝারি ১৫ টাকা এবং ছোট ৬ টাকা প্রতি পিস। প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার মিষ্টি বিক্রি হয়। প্রতিদিনের তৈরি করা মিষ্টি প্রতিদিনই বিক্রি হয়ে যায়। তাই মিষ্টি বাসি হওয়ার সুযোগ থাকে না। তবে বেশি মিষ্টি নিতে হলে আগেই অর্ডার দিয়ে রাখতে হয়।

jagonews24

বিনয় বাবুর ছেলে প্রাণোতোষ সাহা বলেন, ‘মিষ্টি তৈরির পুরো প্রক্রিয়াটি কারিগরের নিজস্ব দক্ষতার বলে সম্পন্ন করেন। বাবার সুনাম ধরে রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। মিষ্টির স্বাদ বা গুণগত মান পরিবর্তন হতে পারে এমন কোনো উপকরণ মেশানো হয় না।’

শিবের হাট বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. নুরুল আনোয়ার হিরন বলেন, ‘বিনয় সাহার রেখে যাওয়া মিষ্টি সন্দ্বীপের অন্যতম ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। এখানকার লোকজন অতিথিদের খাঁটি ও নির্ভেজাল এ মিষ্টি খাওয়াতে পারলে খুশি হন। বিদায়ের সময় এক প্যাকেট মিষ্টিও তুলে দেন।’

jagonews24

যুগ যুগ ধরে সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসা এ মিষ্টির দোকানের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। এ পথচলায় সফলতার সাথে গ্রাহকের মনে আসন গড়তে সক্ষম হয়েছে বিনয় বাবুর মিষ্টি। হাজারো মিষ্টিপ্রেমীর কাছ থেকে ভালোবাসা অর্জন করেছে। মিষ্টির মাঝেই অনন্তকাল বেঁচে থাকবেন বিনয় সাহা।

এসইউ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।