সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তিন শিক্ষার্থীর আবিষ্কার


প্রকাশিত: ১০:২২ এএম, ০৩ অক্টোবর ২০১৫

বিজ্ঞানের সেরা অর্জনের মধ্যে অটোমোবাইল অন্যতম, যা উল্লেখযোগ্যভাবে মানুষের জীবন পরিবর্তন করে দিয়েছে। `Collision avoidance system` বর্তমানকালে মোটরগাড়ির জন্য উদীয়মান একটি প্রযুক্তি। সারা বিশ্বে সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা উদ্ভাবনের জন্য কাজ চলছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ কেন পিছিয়ে থাকবে?

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি – বাংলাদেশ এর তড়িৎ কৌশল এর তিন শিক্ষার্থী তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের থিসিস হিসেবে উদ্ভাবন করেছেন এমন এক পদ্ধতি যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ সক্ষম। তাদের এই থিসিসটি যেই সেমিস্টারে তারা সম্পন্ন করেন, সেই সেমিস্টারের সেরা ১৮ থিসিস এর একটি নির্বাচিত হয়। থিসিস এর গ্রুপ এ ছিলেন মেহরাব মাসাঈদ হাবিব, তাসনিম সানজানা এবং আহমেদ আমিন রুমেল। তারা তাদের এই ডিভাইসের নাম দেন `Automated Car Anti-Collision System Device।`

থিসিস গ্রুপের অন্যতম সদস্য মেহরাব মাসাঈদ হাবিব তাদের এই ডিভাইসের বিস্তারিত সম্পর্কে বলেন `এই ডিভাইস গাড়ির জন্য একটি সেফটি সিস্টেম যা সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে সক্ষম। সড়ক দুর্ঘটনা বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম কারন আহত এবং নিহত হওয়ার। আমাদের এই প্রযুক্তির উদ্দেশ্য হলো যানবাহন এবং অবজেক্ট এর মধ্যেকার সংঘর্ষ প্রতিরোধ করা। আমরা যেই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছি তা দুটো গাড়ির মধ্যেকার critical danger distance নির্নয় করতে সক্ষম এবং সেই সাথে critical distance এর মান বেড়ে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গাড়ি ব্রেক করতে এবং থেমে যেতে সক্ষম হবে।`

Collision avoidance system

গ্রুপের আরেক সদস্য আহমেদ আমিন রুমেল বলেন `আমরা মাইক্রোকন্ট্রোলার ব্যাবহার করেছি, এই প্রযুক্তিমূলত মাইক্রোকন্ট্রোলার নির্ভর। যখন সংঘর্ষ এর আশংকা থাকবে, তখন Sharp distance sensor অবজেক্ট কে ডিটেক্ট করবে এবং গাড়ির সাথে অবজেক্টের দূরত্ব নির্নয় করবে। এই তথ্য সেন্সর পৌছে দিবে মাইক্রোকন্ট্রোলার কে। মাইক্রোকন্ট্রোলার এর মাধ্যমে LCD display এই তথ্যগুলো প্রদর্শন করবে। critical distance এর ক্ষেত্রে সংঘর্ষ হওয়ার অনেক আশংকা থাকে। সেই সময়ে উপরে উল্লেখ করা প্রক্রিয়াতে মাইক্রোকন্ট্রোলার ডিসটেন্স সেন্সর থেকে সিগনাল পেয়ে তা ডিসপ্লেতে পাঠিয়ে দেয় এবং একই সময়ে এলার্মিং ডিভাইসকেও নির্দেশ দেয় এবং প্রাপ্ত নির্দেশ অনুযায়ী এলার্মিং ডিভাইস শব্দ করতে শুরু করে। এই সময়ে একচুয়েটর মোটরড্রাইভারের মাধ্যমে মাইক্রোকন্ট্রোলার থেকে নির্দেশ পায় এবং critical distance এর মান বেড়ে গেলে একচুয়েটর ঘুরতে শুরু করে এবং গাড়িকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে থামিয়ে দেয়।`

এই প্রযুক্তি উদ্ভাবনে ব্যাবহার করা হয়েছে মাইক্রোকন্ট্রোলার, sharp distance sensor, linear actuator, motor driver, LC Display এবং alarming device।

তাসনিম সানজানা এই প্রযুক্তি এর সুবিধাসমূহ সম্পর্কে বলেন, `এই প্রযুক্তি যানবাহনের সংঘর্ষ এবং সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে সক্ষম, এই প্রযুক্তি দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু কমাতে সহায়ক হবে, সড়কদুর্ঘটনার ফলে যেই আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়, তা কমাতে সহায়ক হবে, এছাড়াও এই প্রযুক্তি অটোমোবাইল এর মান এবং পার্ফর্মেন্স বৃদ্ধি করবে।`

তিনি আরো বলেন `আমরা এই প্রযুক্তি একটি গাড়ি তৈরির সময়ে প্রয়োগ করতে চাই এবং মানুষের কল্যানে ব্যাবহার করতে চাই। আমাদের প্রযুক্তির মূল কথা হলো, সড়ক দুর্ঘটনা কে না বলুন।`

এইচএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।